পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৬
ভানুসিংহের পত্রাবলী

ভালো। এদিকে আকাশে মেঘ ও রৌদ্রের লুকোচুরি সুরু হ’য়েচে, আর বৃষ্টিস্নাত স্নিগ্ধ উজ্জ্বল রোদ্দুর তা’র পরশপাথর ঠেকিয়ে সমস্ত আকাশকে সোনা করে তুলেচে। আমি আমার সাম্‌নের খোলা জান্‌লা দিয়ে ঐ শাল, তাল, শিরীষ, মহুয়া, ছাতিমের দল-বাঁধা বনের দিকে প্রায় তাকিয়ে থাকি। এখন আমার ঘড়িতে সাড়ে দুপুর, অর্থাৎ সাধারণ ঘড়িতে দুপুর। ছেলেরা তাদের মধ্যাহ্নভোজন শেষ ক’রে দলে দলে কুয়োতলায় মুখ ধুতে আস্‌চে — দীর্ঘ ছুটির দুঃখ-দিনের পরে কাকগুলো এঁটো শালপাতার উপর শ্রাদ্ধবাড়ির ভিখিরীর পালের মতো এসে প’ড়েচে। বাতাসটি মধুর হ’য়ে বইচে, জাম গাছের চিকণ পাতার ঘনিমার উপর রৌদ্র ঝিল্‌মিল্ ক’রে উঠ্‌চে, পাটল রঙের দুটো গরু ল্যাজ দিয়ে পিঠের মাছি তাড়াতে তাড়াতে ধীর মন্দ গমনে ঘাস খেয়ে বেড়াচ্চে—আমি চেয়ে চেয়ে দেখ্‌চি আর ভাব্‌চি। ইতি ১ জুলাই ১৩২৯।