সংশয়-কলুষিত চিত্তে আমরা তর্ক ক’রে থাকি যে, রাত্রে কয়েক ঘণ্টা না ঘুমোলেই সেটাকে লোকে অনিদ্রা ব’লে নিন্দা করে, অথচ দিনে অন্ততঃ বারো ঘণ্টাই যে কেউ ঘুমোইনে সেটাকে ডাক্তারীশাস্ত্রে বা কোনো শাস্ত্রেই তো অনিদ্রা বলে না। শুনে প্রবীণ লোকেরা আমাদের অর্ব্বাচীন ব’লে হাস্য করেন; বলেন আজকালকার ছেলেরা দু-চার পাতা ইংরেজি প’ড়ে তর্ক ক’র্তে আসে, জানে না-যে, “বিশ্বাসে মিলয়ে নিদ্রা, তর্কে বহু দূর।”
কথাটা একেবারে উড়িয়ে দেওয়া যায় না, কারণ বারবার পরীক্ষা ক’রে দেখা গেচে-যে, তর্ক যতই ক’র্তে থাকি নিদ্রা ততই চ’ড়ে যায়, বিনা তর্কে তা’র হাতে সম্পূর্ণ আত্মসমর্পণ করাই শ্রেয়। অতএব আজকের মতো চিঠি বন্ধ ক’রে শুতে যাই। যদি সম্ভবপর হয় তা হ’লে কাল সকালে চিঠি লিখ্বো।
চিঠি বন্ধ করা যাক্, কেরোসিন প্রদীপটা নিবিয়ে দেওয়া যাক্, ঝপ্ ক’রে বিছানাটার মধ্যে গিয়ে পড়া যাক্। শীত,—বেশ একটু রীতিমতো শীত,—উত্তর-পশ্চিমের দিক থেকে হিমের হাওয়া বইছে। দেহটা ব’লে উঠ্চে, “ওহে কবি, আর বাড়াবাড়ি ভালো নয়, তোমার বাজে কথার কারবার বন্ধ ক’রে মোটা কম্বলটা