আরম্ভ ক’রেচি এমন সময় পশ্চিম দিক থেকে সোঁ সোঁ করে হাওয়া এসে সমস্ত কালো মেঘ আকাশের এক প্রান্ত থেকে আর এক প্রান্ত পর্য্যন্ত বিছিয়ে দিলে। কতদিন পরে ঐ সজল মেঘ দেখে আমার চোখ জুড়িয়ে গেল। যদি আমি তোমাদের কাশীর হিন্দুস্থানী মেয়ে হ’তুম তাহ’লে কাজ্রী গাইতে গাইতে শিরীষগাছের দোলাটাতে দুল্তে যেতুম। কিন্তু এণ্ড্রুজ্ কিম্বা আমি, আমাদের দুজনের কারো হিন্দুস্থানী মেয়ের মতো আকৃতি প্রকৃতি কিম্বা চালচলন নয়, তা ছাড়া সে কাজ্রী গান জানে না, আমিও যা জানতুম ভুলে গেচি। তাই দু-জনে মিলে উপরে আমার ছাদের সাম্নেকার বারান্দায় এসে ব’স্লুম। দেখ্তে দেখ্তে ঘনবৃষ্টি নেমে এলো— জলে বাতাসে মিলে আকাশময় তোলপাড় ক’রে বেড়াতে লাগ্লো। আমার ছাদের সাম্নেকার পেঁপে গাছটার লম্বা পাতা গুলোকে ধ’রে ঠিক যেন কানমলা দিতে লাগ্লো। শেষকালে বৃষ্টি প্রবল হ’য়ে গায়ে যখন ছাঁট লাগ্তে আরম্ভ হ’লো, তখন আমার সেই কোণটাতে এসে আশ্রয় নিলুম। এমন সময় চোখ ধাঁদিয়ে কড়কড় শব্দে প্রকাণ্ড একটা বাজ প’ড়্লো। তামাদের মনে
পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/১৮
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২
ভানুসিংহের পত্রাবলী