পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভানুসিংহের পত্রাবলী
৩১

ছেলেরা দল বেঁধে খাতাপত্র নিয়ে হাজির হবে। তুমি যে-নিয়ম ক’রে দিয়ে গিয়েছিলে, আজকাল সে আর পালন করা হ’য়ে ওঠে না; খাওয়ার পরে দুপুর বেলায় শোওয়া একে বারে ছেড়ে দিয়েচি—সেই ডেস্কের সাম্‌নে সেই চৌকি নিয়ে আমার দিন কাটে। সে জন্যে আমার নালিশ নেই, কাজের দরকার প’ড়লেই কাজ ক’র্‌তে হবে। পৃথিবীতে ঢের লোক আমার চেয়ে ঢের বেশি কাজ করে—সেও আবার অফিসের কাজ—অর্থাৎ সে-কাজ পেটের দায়ে, মনের আনন্দে নয়। আমি-যে ছেলেদের পড়াই, সে তো দায়ে প’ড়ে নয়, সে নিজের ইচ্ছায়—অতএব এ রকম কাজ ক’র্‌তে পারা তো সৌভাগ্য। কিন্তু তবু এক একবার দরজার ফাঁকের ভিতর দিয়ে এই সবুজ পৃথিবীর একটা আভাস যখন দেখ্‌তে পাই তখন মনটা উতলা হ’য়ে ওঠে। আমি যে জন্মকুঁড়ে। যেমন বাঁশির ফাঁকের ভিতর দিয়ে সুর বেরোয়, তেমনি আমার কুঁড়েমির ভিতর থেকেই আমার যেটি আসল কাজ সেইটি জেগে ওঠে। আমার সেই আসল কাজই হ’চ্চে বাণীর কাজ। সময়টাকে কর্ত্তব্য দিয়ে ভরাট ক’রে একেবারে নিরেট ক’রে দিলে বাণী চাপা প’ড়ে যায়। সেই জন্যই আমাকে কেবল