পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভানুসিংহের পত্রাবলী
৩৩

তো বাঁধা প’ড়বো না—আমাকে-যে ঐ শূন্যের ভিতর দিয়ে বর্ষণ ক’র্‌তে হবে। সব সময়েই-যে বৃষ্টি ভ’রে আসে তা নয়, অনেক সময়ে অলস-স্বপ্নের মতো সূর্য্যের আলোতে রঙিয়ে উঠে কিছুই না ক’রে ঘুরে বেড়াই, কিন্তু এই কুঁড়েমিটুকু উপর থেকে আমার জন্যে বরাদ্দ হ’য়ে গেছে, এজন্যে আমি কারো কাছে দায়িক নই। সবই তো বুঝ্‌লুম, কিন্তু কুঁড়েমি করি কখন বলো তো? তুমি তো দেখেই গেচো কাজের আর অন্ত নেই। ঘোড়াকে বিধাতা বাতাসের মতো দ্রুতগামী এবং মুক্ত ক’রে সৃষ্টি ক’রেছিলেন, কিন্তু সেই ঘোড়াকেই মানুষ জিনে লাগামে আষ্টে-পৃষ্টে বেঁধে ফেলে। আমারও সেই দশা। বিধাতার ইচ্ছা ছিল—আমি ভরপূর কুঁড়েমি ক’রে কাটাই, কিন্তু যে-গ্রহের হাতে প’ড়েচি, সে আমাকে ক’ষে খাটিয়ে নিচ্চে। বয়স যখন অল্প ছিল, তখন খাটুনি এড়িয়ে, ইস্কুল পালিয়ে পদ্মার নির্জ্জন চরে বোটের মধ্যে লুকিয়ে বেশ চালাচ্ছিলুম—কিন্তু যখন থেকে তোমার পঞ্জিকা অনুসারে আমার ‘সাতাশ’ বছর বয়স হ’য়েচে, তখন থেকেই কাজের টানে আপনি ধরা দিয়ে কেটে বেরোবার আর পথ পাইনে। নইলে আগেকার মতো হ’লে আমার পক্ষে আলমোড়ায় যেতে