পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪৬
ভানুসিংহের পত্রাবলী

ছোটোর মধ্যে এই-যে বড়োর প্রকাশ,এই হ’চ্চে আশ্চর্য্য। আরেক শক্তি হ’চ্চে, মনের শক্তি। এই মনটি পাঁচটি জ্ঞানেন্দ্রিয় এবং পাঁচটি কর্ম্মেন্দ্রিয় নিয়ে এই অসীম জগতের রহস্য আবিষ্কার ক’র্‌তে বেরিয়েচে। সেই ইন্দ্রিয়গুলি নিতান্ত দুর্ব্বল। চোখ কতটুকুই দেখে, কান কতটুকুই শোনে, স্পর্শ কতটুকুই বোধ করে! কিন্তু মন এই আপন ক্ষুদ্রতাকে কেবলি ছাড়িয়ে যাচ্চে —অর্থাৎ সে যা, সে তা’র চেয়ে অনেক বড়ো। তা’র উপকরণ সামান্য হ’লেও সে অতি-ক্ষুদ্র এবং অতি-বৃহৎ অতি-নিকট এবং অতি-দূরকে কেবলি অধিকার ক’র্‌চে। তা ছাড়া, তা’র মধ্যে যে-ভবিষ্যৎ প্রচ্ছন্ন, সেও অপরিমেয়। একটি ছোটো শিশুর মনের মধ্যেই নিউটনের, সেক্সপীয়ারের মন লুকিয়ে ছিল। বর্ব্বরতার যে-মন পাঁচের বেশি গণনা ক’র্‌তে পার্‌তো না, তারি মধ্যে আজকের সভ্যতার মন জ্ঞানের সাধনায় অভাবনীয় সিদ্ধিলাভ ক’রেচে। শুধু তাই নয়, আরো ভবিষ্যতে সে-যে আরো কী আশ্চর্য্য চরিতার্থতা লাভ ক’র্‌বে, আজ আমরা তা কোনোমতেই কল্পনা ক’র্‌তে পারিনে। তা হ’লেই দেখা যাচ্চে, আমাদের এই-যে মন, যা এক দিকে খুব ছোটো, খুব দুর্ব্বল দেখ্‌তে, আর একদিকে