পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬২
ভানুসিংহের পত্রাবলী

যদি বলো সে-সভায় তো আমাদের খবরের কাগজের কোনো রিপোর্টার উপস্থিত ছিল না। তবে আমি খবর পেলুম কোথা থেকে, তবে তা’র উত্তর হচ্চে এই যে, আইনকর্ত্তারা তাঁদের মন্ত্রণা-সভায় কী আইন পাশ ক’রেচেন তা তাঁদের পেয়াদার গুঁতো খেলেই সব চেয়ে পরিষ্কার বোঝা যায়। যে-মুহূর্ত্তে হাওড়া স্টেশনে আমার রেলের এঞ্জিন বাঁশি বাজালে, সে-বাঁশির আওয়াজে কত তেজ, কত দর্প। আর রবীন্দ্রনাথ ওরফে ভানুদাদা নামক যে-ব্যক্তি তোরঙ্গ বাক্স ব্যাগ বিছানা গাড়িতে বোঝাই ক’রে তা’র তক্তর উপরে দৃঢ় প্রতিষ্ঠিত হ’য়ে ইলেক্‌ট্রিক্ পাখার চলচ্চক্র-গুঞ্জন-মুখর রথ কক্ষে একাধিপত্য বিস্তার ক’র্‌লেন, তা’রই বা কত আশ্বস্ততা। তা’র পরে কত গড়্ গড়্, খড়্ খড়্, ঝর্ ঝর্, ভোঁ ভোঁ, ঢং ঢং, ষ্টেশনে ষ্টেশনে কত হাঁক্-ডাক্, হাঁস্‌ফাঁস্, হন্ হন্, হট্ হট্, আমাদের গাড়ির দক্ষিণে বামে কত মাঠ বাট বন জঙ্গল নদী নালা গ্রাম সহর মন্দির মসজিদ কুটীর ইমারত—যেন বাঘে তাড়া করা গোরুর পালের মতো ঊর্দ্ধশ্বাসে আমাদের বিপরীত দিকে ছুটে পালাতে লাগ্‌লো। এম্‌নি ভাবে চ’ল্‌তে চ’ল্‌তে যখন পিঠাপুরমে পৌঁছতে মাঝে কেবল একটা