পাতা:ভানুসিংহের পত্রাবলী - রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর.pdf/৬৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভানুসিংহের পত্রাবলী
৬৩

ষ্টেশন মাত্র আছে, এমন সময় এঞ্জিনটার উপরে নক্ষত্রসভার অদৃশ্য পেয়াদা তা’র অদৃশ্য পরোয়ানা হাতে নিয়ে নেবে প’ড়্‌লো, আর অম্‌নি কোথায় গেল তা’র চাকার ঘুর্‌নি, তা’র বাঁশির ডাক, তা’র ধূমোদ্গার, তা’র পাথুরে কয়লার ভোজ! পাঁচ মিনিট যায়, দশ মিনিট যায়, বিশ মিনিট যায়, এক ঘণ্টা যায়, ষ্টেশন থেকে গাড়ি আর নড়েই না! সাড়ে পাঁচটায় পিঠাপুরমে পৌঁছবার কথা কিন্তু সাড়ে ছ-টা, সাড়ে সাতটা বাজে তবু এমনি সমস্ত স্থির হ’য়ে রইলো-যে, “চরাচরমিদং সর্ব্বং”-যে চঞ্চল, এ কথাটা মিথ্যা ব’লে বোধ হ’লো। এমন সময় হাঁপাতে হাঁপাতে ধক্ ধক্ ধুক্ ধুক্ ক’র্‌তে ক’র্‌তে আর একটা এঞ্জিন এসে হাজির। তা’র পরে রাত্রি সাড়ে আট্‌টার সময় আমি যখন পিঠাপুরমে রাজবাড়িতে গিয়ে উঠ্‌লুম তখন আমার মনের অবস্থাটা দেখি ঠিক সেই এঞ্জিনেরই মতো। মনকে জিজ্ঞাসা ক’র্‌লুম, “কেমন হে, মাদ্রাজে যাচ্চো তো? সেখান থেকে কাঞ্চি মদ্র অন্ধ পৌণ্ড্র প্রভৃতি কত দেশ দেশান্তর দেখ্‌বার আছে, কত মন্দির কত গুহা, কত তীর্থ ইত্যাদি ইত্যাদি”,—“আমার মন সেই এঞ্জিনটার মত চুপ ক’রে গম্ভীর হ’য়ে রইলো, সাড়াই