পাতা:ভারতকোষ - প্রথম খণ্ড.pdf/৩৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

অঘােরনাথ চক্রবর্তী কিংবদন্তী অনুসারে ইহার ১৮ পুত্র হইতে ১৮ গােত্র উদ্ভূত হইয়াছিল ও ইনি ক্ষত্রিয় ছিলেন কারণ এই শ্রেণী মূলতঃ শস্ত্রোপজীবী ছিল। কালক্রমে ইহাদের বিভিন্ন শ্রেণী বা জাতি কৃষি পশুপালন বাণিজ্য ইত্যাদি কার্যে লিপ্ত হওয়ায় ইহারা বার্তাশস্ত্রোপজীবী সংঘ অথবা শ্রেণীরূপে পরিগণিত হন। বৈষ্ণবর্ণের অন্তর্গত অগ্রতিকায় বা অগ্রোতক বংশী বা অগ্রবাল জাতির উল্লেখ প্রায় এয়ােদশ শতাব্দী হইতে পাওয়া যায়। ইহাদের ঘন বসতি দক্ষিণ-পূর্ব পাঞ্জাব, উত্তর রাজস্থান ও উত্তর প্রদেশের পশ্চিম অংশ। বাণিজ্য বা অন্য কারণে দেশের অন্যত্র ইহাদের বিস্তার হয়। যাহারা রাজস্থানে ও মধ্যদেশে যান তাহার যথাক্রমে মারােয়াড়ী ও দেশী নামে অভিহিত হন। জগদীশনারায়ণ সরকার অঘােরনাথ চক্রবর্তী (১৮৫২-১৯১৫ খ্র) চব্বিশ পরগণার রাজপুর গ্রামে দাক্ষিণাত্য বৈদিক বংশে জন্ম ও মৃত্যু বারাণসীতে। সর্বভারতীয় সংগীতক্ষেত্রে অঘােরনাথ সুপ্রতিষ্ঠিত প্রতিভাবান গায়ক। কলিকাতায় তঁাহার সংগীতশিক্ষা। প্রধান ওস্তাদ ধ্রুপদ-খেয়াল গায়ক আলী বখস, পরে মুরাদ আলী খা, দৌলৎ খা ও জান্ বাঈয়ের। নিকটেও তিনি সংগীত শিক্ষা করেন। ধ্রুপদ, ভজন ও টপ্লাগানে এবং কণ্ঠমাধুর্যের জন্য তিনি স্বনামধন্য। শেষ দশ বৎসর বিপুল গৌরবে তিনি বারাণসী ও বােম্বাইতে অবস্থান করিয়াছেন। যতীন্দ্রমােহন ঠাকুরের প্রাসাদে তাহার গানের চারিখানি রেকর্ড করা হইয়াছিল। সেগুলি ‘বিফল জনম বিফল জীবন’ ‘আনন্দ বন গিরিজ। (G2-12912 ও 12909 ), গােবিন্দ মুখারবিন্দ’ ও ‘নজর। দিল বাহার’ (G2-12910 ও 12911)। ১৯১১ খ্রী সম্রাট পঞ্চম জর্জের দিল্লী দরবারে তিনি সংগীত পরিবেশন করেন। কাশীর শ্রেষ্ঠ পণ্ডিতগণ কর্তৃক তিনি সংগীতরত্নাকর’ উপাধিতে ভূষিত হন। সংগীতশিষ্য , নিকুঞ্জবিহারী দত্ত, পুলিনবিহারী মিত্র, হরিনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, গােপালচন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়, অমরনাথ ভট্টাচার্য প্রভৃতি। দ্ৰ দিলীপকুমার মুখােপাধ্যায়, সংগীতরত্নাকর অঘােরনাথ, যুগান্তর সাময়িকী, ২৭ এপ্রিল, ১৯৫৮খ্রী। দিলীপকুমার মুখোপাধ্যায়। অঘােরনাথ চট্টোপাধ্যায় (১৮৫১-১৯১৫ খ্র) অধ্যাপক, শিক্ষাবিং। ঢাকা বিক্রমপুরের অধিবাসী। তিনি কলিকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গিলক্রাইস্ট বৃত্তি লাভ করিয়া এডিনবরায় যান ও এডিনবরা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি. এসসি,

________________

অঙ্ক পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করিয়া পদার্থবিজ্ঞানে বিশেষ পুরস্কার লাভ করেন। ইহা ব্যতীত প্রতিযােগিতামূলক | পরীক্ষায় প্রথম স্থান অধিকার করিয়া তিনি রসায়নবিজ্ঞানের ‘হােপ’ পুরস্কার লাভ করেন। স্বদেশে প্রত্যাবর্তন করিয়া তিনি হায়দরাবাদ নিজাম রাজ্যে শিক্ষাসংস্কারকার্যে যােগদান করেন ও নিজাম কলেজ প্রতিষ্ঠা করেন। সমগ্ৰ নিজাম রাজ্যে বালক-বালিকাদের জন্য তিনি বহু বিদ্যালয় স্থাপন করিয়াছিলেন। তিনি বাংলা ভাষায় কবিতাও রচনা করিতেন। সংস্কারমুক্ত ছিলেন বলিয়া এবং তাহার সরল ব্যবহারে তিনি জাতিধর্মনির্বিশেষে সকলের ভক্তিভাজন ছিলেন। তাহার পুত্রকন্যাদের মধ্যে বীরেন্দ্রনাথ, হারীন্দ্রনাথ ও সরােজিনী নাইডু বিশেষ খ্যাতি লাভ করিয়াছেন। অঘােরী, অঘােরপন্থী বীভৎস বস্তু সম্বন্ধে বিকারহীন এবং ঘৃণারহিত ধর্মসম্প্রদায়বিশেষ। যাহারা অঘাের অর্থাৎ ভীষণের পন্থা অবলম্বন করিয়া সাধনা করেন তাহাদের অঘােরপন্থী বা অঘােরী বলা হয়। যে শিব অনাসক্ত, যাহার আচার-ব্যবহার সম্পূর্ণ লােকাচার বহির্ভূত, বিষ্ঠা চন্দন যিনি সমজ্ঞান করেন তাহার অপর নাম অঘােরনাথ। যাঁহারা শিবের এই অঘােরত্বের সাধক তাহাদের প্রথমে যথানিয়মে সন্ন্যাস লইয়া অঘােরম লইতে হয়। সন্ন্যাসীর এই মন্ত্রকে অত্যন্ত শক্তিসম্পন্ন মনে করেন এবং অঘােরীদের দৈবশক্তির অধিকারী বলিয়া বিশ্বাস করেন। অঘােরীগণ কাপালিক নহেন, তাহারা নববধ করেন না, শক্তির নিকট নরবলি দেন না, যদিও শিবের ন্যায় তাহার শ্মশানচারী এবং মৃত নরমাংস ভক্ষণে তাঁহাদের অরুচি | নাই। জীবনধারণের প্রয়ােজনসামগ্রী এতই স্বল্প যে লােকালয়ে প্রায়ই তাহাদের আনাগােনা নাই— মনুষ্যসমাজের সহিত তাহাদের যােগ শুধু শ্মশানগামী শববাহকদের সহিত, তাহাদের নিকট হইতেই আহার্য বা পানার্থে কারণ-বারি সংগ্রহ করেন। উলঙ্গ থাকেন বলিয়া তাহাদের পরিধেয় বস্ত্রের প্রয়ােজন হয় না। এই সাধনপদ্ধতি খুব প্রাচীন বলিয়া বােধ হয়, বুদ্ধদেব এইরূপ উলঙ্গ সাধু সম্প্রদায়কে ‘অচেলক’ বলিতেন। ইংরেজী সভ্যতার প্রভাব ও আইন প্রণয়নের ফলে বর্তমানে ইহাদের সংখ্যা নগণ্য। দ্র অক্ষয়কুমার দত্ত, ভারতবর্ষীয় উপাসক-সম্প্রদায়, | ২য় ভাগ, ১৮৮৩খ্রী।

| অঙ্ক গণিত ও সংখ্যা দ্র

১৪