পাতা:ভারতকোষ - প্রথম খণ্ড.pdf/৬২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

________________

অণুবীক্ষণ যন্ত্র দুর-বিচ্ছিন্ন। সেইজন্য ইহাদের অণুগুলির যে কোনও দিকে যথেচ্ছ স্বাধীনভাবে যাইবার প্রবণতা বেশি। ফলে যে কোনও গ্যাস সহজেই বহুদূরে ছড়াইয়া পড়িতে পারে। কোনও গ্যাসের ভৌত গুণাবলী একক আয়তনে অবস্থিত অণুসমূহের উপর, উহার ভরের উপর ও গড় গতিশক্তির উপর নির্ভর করে। রাসায়নিক গুণাবলী নির্ভর করে, উহাতে অবস্থিত পরমাণুর সংখ্যা এবং উহাদের সজ্জার উপর। অলক চক্রবর্তী অণুবীক্ষণ যন্ত্র ক্ষুদ্র বস্তুকে বড় করিয়া দেখিবার যন্ত্রের নাম অণুবীক্ষণ যন্ত্র। খালি চোখে কোনও বস্তুকে স্পষ্ট করিয়া দেখিবার ক্ষমতা সীমাবদ্ধ। সাধারণ দৃষ্টিক্ষমতাযুক্ত কোনও ব্যক্তি চোখ হইতে ১০ ইঞ্চি বা ২৫ সেন্টিমিটার দূরের বস্তুকে খুব স্পষ্ট দেখিতে পায়। চোখ হইতে ১০ ইঞ্চির মধ্যবর্তী বস্তু আকারে বড় দেখাইলেও উহা অস্পষ্ট বলিয়া মনে হয় কারণ চোখের লেন্স তখন আর উহাকে ফোকাসে আনিয়া প্রতিবিম্বের সৃষ্টি করিতে পারে না। অণুবীক্ষণ যন্ত্র বস্তুকে চোখের খুব নিকটে আনে এবং প্রতিবিম্বকেও চোখের লেন্সের ফোকাসে লইয়া আসে। প্রতিবিম্বটি আকারে বিবর্ধিতও হয়। ফলে বস্তুটি সহজেই দেখা যায়। অণুবীক্ষণ যন্ত্র দুই 1aWiki প্রকারের। ১. সরল অণুবীক্ষণ যন্ত্র ২. যৌগিক অণুবীক্ষণ যন্ত্র। সাধারণ বিবর্ধক কাচ (magnifying glass) বস্তুতঃ একটি উত্তল লেন্স বা অভিসারী লেন্স

________________

অণুবীক্ষণ যন্ত্র অথবা অনেকগুলি লেন্সের সমন্বয়ে নির্মিত একটি অভিসারী লেন্সের দ্বারা গঠিত একটি সরল অণুবীক্ষণ। | ঠিক কবে অণুবীক্ষণের মূল নীতি আবিষ্কৃত হইয়াছিল | তাহা সকলেরই অজানা। কথিত আছে, প্রাচীনকালে চীন দেশে এবং ভূমধ্যসাগরের চতুপার্শ্বের সুসভ্য অঞ্চলে | চশমা হিসাবে বিবর্ধক কাচ ব্যবহৃত হইত। ১৫৯০ খ্রীষ্টাব্দে জ্যাকেরিয়া জানসেন নামে একজন ওলন্দাজ চশমা| নির্মাণকারী ৬ ফুট লম্বা এবং দুইটি লেন্সযুক্ত একটি যৌগিক অণুবীক্ষণ নির্মাণ করেন। পরবর্তীকালে বিভিন্ন দেশে এইরূপ অণুবীক্ষণ নির্মিত হয়, কিন্তু সেই সব যন্ত্র ছিল- গােলাপেরণ (spherical aberration) এবং বর্ণাপেরণ দোষে দুষ্ট ( যে বিন্দুগুলি দিয়া আলােক রশ্মি গেলে স্পষ্ট প্রতিবিম্বের সৃষ্টি করে-- সেই বিন্দু হইতে আলাের বিচ্যুতিকে অপেরণ বলে)। কার্যপ্রণালী ক সাধারণ অনুবীক্ষণ একটি উত্তল | লেন্স বা অভিসারী লেন্সের ফোকাস-দূরত্বের মধ্যে কোনও বস্তু রাখিলে একই পার্শ্বে বস্তুটির বিবর্ধিত অলীকবিম্ব সৃষ্ট হয়। লেন্সের পিছনে চোখ রাখিলে বিম্বটি সহজেই দেখা যায়। লেন্স হইতে বস্তু-দূরত্ব ঠিক করিয়া বিম্বটিকে স্পষ্ট | দর্শনের নিকটতম দূরত্বে আনা হয় কারণ তখনই বস্তুটির বিবর্ধন সর্বাপেক্ষা বেশি। ছােট লেখা বা পুথি পড়িবার সময়ে যে বিবর্ধক কাচ ব্যবহার করি তাহা এই ধরনের । ১. বিবধিত অলীকবি ২. বস্তু ৩. অভিসারী লেন্স। খ. যৌগিক অণুবীক্ষণ বস্তু অত্যন্ত ক্ষুদ্র হইলে | যৌগিক অণুবীক্ষণের ব্যবহার সুবিধাজনক। কারণ এই যন্ত্রের বিবর্ধনক্ষমতা সরল অণুবীক্ষণ অপেক্ষা বেশি। ইহাতে কোনও ধাতব নলের দুই প্রান্তে দুইটি অভিসারী

লেন্স সম-অক্ষীয় (co-axial) অবস্থায় নির্দিষ্ট দূরত্বে আবদ্ধ | থাকে। উহাদের মধ্যকার দূরত্ব অবশ্য পরিবর্তন করা যায়। লেন্স দুইটির একটির নাম অবজেকটিভ বা অভিলক্ষ্য এবং অপরটি আই-পিস্ বা অভিনেত্র। অভিলক্ষ্য বা অবজেকটিভ কার্যতঃ কয়েকখানি লেন্স দ্বারা গঠিত স্বল্প ফোকাস-দূরত্বের একখানি অভিসারী লেন্স। ইহাকে

৩৭