পাতা:ভারতকোষ - প্রথম খণ্ড.pdf/৬৯৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।
উর্মিলা দেবী
উষানাথ সেন

করেন, তাহার দ্বারাও অসহযােগ আন্দোলনের বিশেষ পােষকতা ও প্রচার হইতে থাকে।

১৯৩০ খ্রীষ্টাব্দের লবণ-সত্যাগ্রহ ও আইন অমান্য আন্দোলনের পূর্বেই ভারতরমণীসমাজ রাষ্ট্রীয় অধিকার অর্জনে নারীজাতির দায়িত্বপালনের পূর্ণ গৌরব অর্জন করেন। স্বয়ং গ্রেপ্তার হইবার পূর্বে মহাত্মা গান্ধী। নারীসমাজের প্রতি যে নিবেদন জানান, তাহার ফলে কলিকাতায় নারী-সত্যাগ্রহসমিতি প্রতিষ্ঠিত হয়। উমিলা দেবী ছিলেন এই সমিতির সভানেত্রী। বঙ্গের বহু প্রবীণ ও নবীন মহিলা কর্মী ইহাতে যোগ দিয়াছিলেন, কলিকাতাবাসী ভিন্ন প্রদেশীয় বহু স্বদেশসেবিকাও ছিলেন এই সমিতির কর্মী। নারী-সত্যাগ্রহ সমিতির পিকেটিং-এর ফলে কলিকাতায় এই সময়ে বিদেশী বস্ত্র আমদানি এক রূপ। বন্ধ হইয়া যায়। বিদেশী বস্ত্র বর্জনের এই আন্দোলনে প্রবৃত্ত হইয়া উমিল। দেবী পুলিশ কর্তৃক প্রহৃত হন এবং নিষিদ্ধ শােভাযাত্রায় যােগদান করিবার ফলে কারাদণ্ড ভােগ করেন। ১৯৩১ খ্রীষ্টাব্দে হিজলী বন্দীনিবাসে রাজবন্দীদের উপর অত্যাচারের সময়ে ও উমিল। দেবী তাহাদের আনুকূল্যবিধানে বিশেষ দৃঢ়চিত্ততা ও সাহসের পরিচয় দেন।


সাহিত্যরচনাতেও উমিলা দেবীর অনুরাগ ছিল ; যৌবনে তিনি পুষ্পহার’ নামে একখানি গল্পের বই প্রকাশ করিয়াছিলেন। শেষ জীবনে মহাত্মা গান্ধী, সরােজিনী নাইডু প্রভৃতির যে সকল স্মৃতিকথা তিনি লিখিয়াছেন, তাহাতে ইহাদের ব্যক্তিজীবনের কোনও কোনও বিশেষ দিকের স্নিগ্ধাজ্জল পরিচয় পাওয়া যায়। এই প্রবন্ধমালার অন্যতম কবি-প্রিয়া’তে রবীন্দ্রনাথের সহধর্মিণী মৃণালিনী দেবীর বিস্মৃত প্রায় নিভৃতবাসী জীবনের ঔজ্জ্বল্য দীপ্যমান। হইয়াছে।

দ্র যােগেশচন্দ্র বাগল, জাতীয় আন্দোলনে বঙ্গনারী, কলিকাতা, ১৩৬১ বঙ্গাব্দ ; কমল দাশগুপ্ত, স্বাধীনতা
সংগ্রামে বাংলার নারী, কলিকাতা, ১৩৭০ বঙ্গাব্দ ; 'Urmila Devi', The Calcutta Municipal | Gazette, 19 May, 1956.
পুলিনবিহারী সেন

উষা উষস দ্র।

উষানাথ সেন (১৮৮০-১৯৫৯ খ্রী) খ্যাত না মা সাংবাদিক। ১৮৮০ খ্রীষ্টাব্দের ৬ অক্টোবর চব্বিশ পরগনার অন্তর্গত নৈহাটির সন্নিকটে গরিফায় জন্মগ্রহণ করেন। পিতার নাম নবীনকৃষ্ণ সেন, মাতা শিবানী দেবী। তাঁহার সাংবাদিক জীবনের প্রধান কর্মস্থল ছিল দিল্লী। কেশবচন্দ্র রায়ের সহযােগী রূপে কর্ম জীবনের সূত্রপাত করিয়া পরে তিনি ‘অ্যাসােসিয়েটেড প্রেস অফ ইণ্ডিয়া'-র (১৯১০ খ্র ; পরবর্তী কালে ‘প্রেস ট্রাস্ট অফ ইণ্ডিয়া’য় রূপান্তরিত) | দিল্লী কেন্দ্রের ম্যানেজার হইয়াছিলেন।

দিলী ও সিমলায় ব্রিটিশ শাসকগোষ্ঠীতে উষনাথের বিশেষ প্রতিপত্তি ছিল। এই প্রতিপত্তি তাহার সংবাদ সরবরাহ প্রতিষ্ঠানের উন্নতিতে অনেক সহায়তা করিয়াছে। সরকারি মহলে তঁাহার জনপ্রিয়তার ফলে কেশবচন্দ্র | রায়ের পর তিনি কেন্দ্রীয় আইন পরিষদের সদস্য মনােনীত হন। ইহা ছাড়া তিনি সি বি. ই. ( ১৯৩১ খ্ৰী) ও নাইট ( ১৯৪৪ খ্র) উপাধিতে ভূষিত হইয়াছিলেন। বহুকাল তিনি দিল্লীর প্রেস গ্যালারি কমিটি ও প্রেস অ্যাসােসিয়েশনের সভাপতি ছিলেন। দিল্লীর রোটারি ক্লাব | তাহারই উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত হয়। অল ইণ্ডিয়া ফাইন। আট্‌স অ্যাও ক্র্যাফটস সােসাইটিরও তিনি ছিলেন প্রথম সভাপতি। দুঃস্থ সাংবাদিকদের চিকিৎসাব্যবস্থার জন্য উমানাথ বেশ কিছু পরিমাণ অর্থ দান করিয়া যান।

১৯৫৯ খ্ৰীষ্টাব্দের ২০ এপ্রিল দিল্লীতে তাহার মৃত্যু হয়।

দুর্গা দাস