জড়ত্বকে আঘাত করেছিলেন, এবং জড়ত্ব তাঁকে ক্ষমা করে নি।
তিনি জানতেন সকলপ্রকার জড়ত্বের মূলে আত্মার প্রতি অশ্রদ্ধা। জন্তু পায় নি তার স্বরাজ, কেননা সংস্কারের দ্বারা সে চালিত। জ্ঞানালোকিত আত্মা মানুষের ধর্মকে কর্মকে তার সৃষ্টিকে যে পরিমাণে অধিকার করে সেই পরিমাণেই তার স্বরাজ প্রসারিত হয়। সভ্যতার ইতিহাস মানুষের আত্মবুদ্ধি আত্মবিশ্বাস আত্মসম্মানের শক্তিতে স্বরাজ্যবিস্তারের ইতিহাস।
মনুষ্যত্বের সর্বোচ্চ শিখরে আত্মার জয়ঘোষণা একদিন এই ভারতবর্ষে যেমন অসংশয়িত বাণীতে প্রকাশ পেয়েছিল এমন আর কোথাও পায় নি। সেই বাণীই ভারতবর্ষে যখন খণ্ডিত আচ্ছন্ন অবরুদ্ধ তখনি রামমোহন রায় তাকে পুনরায় নূতন করে নির্মল করে বহন করে আনলেন। তার পূর্বেই অধিকাংশ ভারতবর্ষ নিজেকে নিকৃষ্ট অধিকারী বলে স্বীকার করে নিয়ে আত্মোপলব্ধি ও আত্মপ্রকাশের দায়িত্ব বিস্মৃত হয়ে জ্ঞানে কর্মে তামসিকতাকে অবলম্বন করে আত্মাবমাননায় নিমগ্ন ছিল। তার প্রথাজড়ত্বের-ব্যাধি-স্ফীত মন মানুষের শ্রেষ্ঠ অধিকারকে কেবল যে অঙ্গীকার করলে না তা নয়, তাকে ভর্ৎসনা করলে, আঘাত করলে।
আশ্চর্যের বিষয় এই যে, এই সম্পূর্ণ আত্মবিস্মৃত দেশের ক্ষুদ্র সীমানার মধ্যেই তিনি আত্মার বাণীকে উদ্বোধিত করতে চেয়েছিলেন এমন নয়। যে-কোনো সম্প্রদায়ই আপন জড় বাহ্য রূপের দ্বারা, জ্ঞানবিরোধী অন্ধ আচারের দ্বারা আপন