পাতা:ভারতবর্ষে.djvu/১১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটিকে বৈধকরণ করা হয়েছে। পাতাটিতে কোনো প্রকার ভুল পেলে তা ঠিক করুন বা জানান।
ভারতবর্ষে

বলিতে গেলে, হিন্দুদিগের নিকট মৃত্যু একটি পরিবর্ত্তন মাত্র;– যে পরিবর্ত্তনের সমগ্র শ্রেণীপরম্পরাই জীবন। তাঁহারা যাহা বলেন আধুনিক বিজ্ঞানও তাহাই বলে। জীবন বিশিষ্ট জীব-বিশেষ এক-একটি আকারমাত্র—উপাদান-পুঞ্জীকরণের বিভিন্ন প্রণালীমাত্র। আমাদের দেহের কোষাণু লইয়াই আমাদের সমগ্র দেহ; সেই কোষাণু-সমূহ ক্ষণে ক্ষণে মরিতেছে—তাহাতেই আমরা জীবিত আছি। ... ... ... ... সমস্ত জগৎকে মহাসাগরের সহিত তুলনা করা যাইতে পারে। তাহাতে অসংখ্য তরঙ্গের হিল্লোল বহিতেছে; এই প্রত্যেক তরঙ্গ যাহা উঠিতেছে ও পড়িতেছে উহা এক একটি জীবনস্বরূপ—যাহার আরম্ভ ও শেষ আমরা দেখিতে পাই। তরঙ্গসকল যেমন ফেণোচ্ছ্বাসে ভাঙ্গিয়া পড়িতেছে, অমনি এক দুর্দ্দম্য শক্তি আসিয়া আবার উহাদিগকে আলোকের দিকে উর্দ্ধে উঠাইতেছে। কিন্তু কে না দেখিতে পায়, এই নৃত্যশীল তরঙ্গসকল এক-একটি আকার মাত্র, কারণ প্রতিমুহূর্ত্তেই তাহাদের উপাদান ভিন্ন হইয়া যাইতেছে—তাহাদের মধ্যে বাস্তবিক আর কিছুই নহে, যে-এক অদ্বিতীয় সাধারণ শক্তি তাহাদের মধ্যে আছে তাহাই কেবল বাস্তবিক—তাহাই সমস্ত সাগরকে বিচলিত করিয়া তুলিতেছে। কোন জীববিশেষ এই মহাশক্তির ক্ষণিক বিকাশমাত্র। সে জীব পরিবর্ত্তিত হউক, বিকৃত হউক, মৃত্যুমুখে পতিত হউক—সেই শক্তির তাহাতে কিছুমাত্র আইসে যায় না। সেই একই শিবশক্তি যাহা জগতের আদিম নৈহারিক অবস্থায় কাজ করিয়াছিল, তাহ আজও সূর্য্যে গ্রহনক্ষত্রে বিকাশিত হইয়া আমাদের ভূলোকে মহাদেশরূপে, সমুদ্ররূপে, পর্ব্বতরূপে, জীবরূপে, মনুষ্যরূপে, সমাজরূপে, নগররূপে বিকীর্ণ হইতেছে। সেই একই শিবশক্তি, দৃশ্যমান গতিকে আণবিক গতিতে পরিণত করিয়া