এক প্রান্তে যুগান্তরের জাগ্রত মানবহৃদয়ের বিপুল কলধ্বনিকে আজ সহস্র বৎসর পরে নিঃশব্দ ইঙ্গিতে ব্যক্ত করিতেছে। ইহা কেনো-একটি প্রাচীন নবযুগের মহাকাব্যের কয়েকখণ্ড ছিন্ন পত্র।
এই দেবালয়শ্রেণী তাহার নিগূঢ়নিহিত নিস্তব্ধ চিত্তশক্তির দ্বারা দর্শকের অন্তঃকরণকে সহসা যে ভাবান্দোলনে উদ্বোধিত করিয়া তুলিল তাহার আকস্মিকতা, তাহার সমগ্রতা, তাহার বিপুলতা, তাহার অপূর্বতা প্রবন্ধে প্রকাশ করা কঠিন-বিশ্লেষণ করিয়া খণ্ড খণ্ড করিয়া বলিবার চেষ্টা করিতে হইবে। মানুষের ভাষা এইখানে পাথরের কাছে হার মানে–পাথরকে পরে পরে বাক্য গাঁথিতে হয় না, সে স্পষ্ট কিছু বলে না, কিন্তু যাহা-কিছু বলে সমস্ত একসঙ্গে বলে–এক পলকেই সে সমস্ত মনকে অধিকার করে–সুতরাং মন যে কী বুছিল, কী শুনিল, কী পাইল, তাহা ভাবে বুঝিলেও ভাষায় বুঝিতে সময় পায় না–অবশেষে স্থির হইয়া ক্রমে ক্রমে তাহাকে নিজের কথায় বুঝিয়া লইতে হয়।
দেখিলাম মন্দিরভিত্তির সর্বাঙ্গে ছবি খোদা। কোথাও অবকাশমাত্র নাই। যেখানে চোখ পড়ে এবং যেখানে চোখ পড়ে না, সর্বত্রই শিল্পীর নিরলস চেষ্টা কাজ করিয়াছে।
ছবিগুলি বিশষভাবে পৌরাণিক ছবি নয়, দশ অবতারের লীলা বা স্বর্গলোকের দেবকাহিনীই যে দেবালয়ের গায়ে লিখিত হইয়াছে তাও বলিতে পারি না। মানুষের ছোটোবড়ো ভালোমন্দ প্রতিদিনের ঘটনা–তাহার খেলা ও কাজ, যুদ্ধ ও শান্তি, ঘর ও বাহির, বিচিত্র আলেখ্যের দ্বারা মন্দিরকে বেষ্টন করিয়া আছে। এই ছবিগুলির মধ্যে আর কোনো উদ্দেশ্য দেখি না, কেবল এই সংসার যেমনভাবে চলিতেছে তাহাই আঁকিবার চেষ্টা। সুতরাং চিত্রশ্রেণীর ভিতরে এমন অনেক জিনিস চোখে পড়ে যাহা দেবালয়ে অঙ্কনযোগ্য বলিয়া হঠাৎ মনে হয় না। ইহার মধ্যে বাছা-