ভারতবর্ষ।
অধুনা আমাদের কাছে কর্ম্মের গৌরব অত্যন্ত বেশি। হাতের কাছে হৌক—দূরে হৌক, দিনে হৌক—দিনের অবসানে হৌক, কর্ম্ম করিতে হইবে। কি করি, কি করি,—কোথায় মরিতে হইবে— কোথায় আত্মবিসর্জন করিতে হইবে, ইহাই অশান্তচিত্তে আমরা খুঁজিতেছি। যুরোপে লাগাম-পরা অবস্থায় মরা একটা গৌরবের কথা। কাজ, অকাজ, অকারণ কাজ, যে উপায়েই হৌক, জীবনের শেষ নিমেষপাত পর্যন্ত ছুটাছুটি করিয়া মাতামাতি করিয়া মরিতে হইবে! এই কর্ম্মনাগরদোলার ঘূর্ণিনেশা যখন এক একটা জাতিকে পাইয়া বসে, তখন পৃথিবীতে আর শান্তি থাকে না। তখন, দুর্গম হিমালয়-শিখরে যে লোমশছাগ এতকাল নিরুদ্বেগে জীবন বহন করিয়া আসিতেছে, তাহারা অকস্মাৎ শিকারীর গুলিতে প্রাণত্যাগ করিতে থাকে। বিশ্বস্তচিত্ত সীল এবং পেঙ্গুয়িন পক্ষী এতকাল জনশূন্য তুষারমরুর মধ্যে নির্ব্বিরোধে প্রাণধারণ করিবার সুখটুকু ভোগ করিয়া আসিতীছিল,— অকলঙ্ক অকলঙ্ক শুভ্র নীহার হঠাৎ সেই নিরীহ প্রাণীদের রক্তে রঞ্জিত হইয়া উঠে। কোথা হইতে বণিকের কামান শিল্পনিপুণ প্রাচীন চীনের কণ্ঠের মধ্যে অহিফেনের পিণ্ড বর্ষণ করিতে থাকে,— এবং
* বোলপুর শাস্তিনিকেতন আশ্রমে পঠিত।