পাতা:ভারতশিল্পে মূর্তি.djvu/৩৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।

পার্শ্বদেবতা এই দুই বিপরীত ত্রিভঙ্গ ঠামে রচনা না করিলে সম্পূর্ণ মূর্তির সৌন্দর্যে ব্যাঘাত ঘটে এবং দুই পার্শ্বদেবতার একটি প্রধান দেবতা হইতে বিপরীতমুখী হইয়া অবস্থান করেন। ত্রিভঙ্গ মূর্তিতে মধ্যসূত্র বা মানসূত্র হইতে মস্তক এক অংশ ও কটিদেশ এক অংশ বামে বা দক্ষিণে সরিয়া পড়ে।

 অতিভঙ্গ। এইরূপ মূর্তিতে ত্রিভঙ্গ ভঙ্গিই অধিকতর বঙ্কিমতা দিয়া রচিত হয় এবং ঝড়ে যেরূপ গাছ তেমনি মূর্তির কটিদেশ হইতে উর্ধ্বদেহ কিম্বা কটি হইতে পদতল পর্যন্ত অংশ বামে দক্ষিণে পশ্চাতে অথবা সম্মুখে প্রক্ষিপ্ত হয়। অতিভঙ্গ ঠাম শিবতাণ্ডব, দেবাসুরযুদ্ধ প্রভৃতি মূর্তিতেই সাধারণতঃ ব্যবহৃত হয়। মূর্তিতে গতিবেগ নর্তনশক্তিপ্রয়োগ ইত্যাদি দেখাইতে হইলে অতিভঙ্গ ঠামে গঠন করা বিধেয়।

 শুক্রনীতিসার বৃহৎসংহিতা প্রভৃতি প্রাচীন গ্রন্থে মূর্তির মান পরিমাণ আকৃতি প্রকৃতি তন্ন তন্ন করিয়া দেওয়া আছে। মূর্তিনির্মাণ সম্বন্ধে শিল্পচার্যগণের কয়েকটি উপদেশ প্রয়োজনবোধে উদ্ধত করা গেল, যথা—

সেব্যসেবকভাবেষু প্রতিমালক্ষণম্ স্মৃতম্।

 মূর্তি ও প্রতিমার যে-সকল লক্ষণ মান পরিমাণ ইত্যাদি দেওয়া হইল তাহা যে-সকল প্রতিমার সহিত শিল্পীর পূজকের বা প্রতিষ্ঠাতার সেব্য ও সেবক, প্রভু ও দাস, অর্চিত ও অর্চক সম্বন্ধ কেবল তাহাদের জন্যই নির্দিষ্ট এবং কেবল সেইরূপ মূর্তিই যথাশাস্ত্র সর্বলক্ষণসম্পন্ন করিয়া গঠন করিতে হয়। অন্য-সকল মূর্তি, যাহার পূজা কেহ করিবে না, তাহাদের শিল্পী যথা-অভিরুচি গঠন করিতে পারে।

লেখ্যা লেপ্যা সৈকতী চ মুগ্ময়ী পৈষ্টিকী তথা
এতেষাং লক্ষণাভাবে ন কৈশ্চিদ্দোষ ঈরিতঃ॥

২৯