পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/১০৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৯৬
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

নাই, এ কথা কি করিয়া বলা চলে। চিত্ত গতিশীল, গতিময়, চিত্র স্থায়ী, এই উভয়কে কি করিয়া এক বলা যায়। ইহার উত্তরে বুদ্ধঘোষ বলিতেছেন, চিত্র করিবার সময় চিত্রকরদের মনে এইরূপ চিত্রসংজ্ঞা বা চিত্রকল্পনা উৎপন্ন হয় যে আমরা এইরূপ এইরূপ রূপ সৃষ্টি করিব। এই চিত্র কল্পনাকে তদনুরূপ রেখা, বর্ণানুরঞ্জন, উদ্যোতন, ও বর্ত্তনাদি নিষ্পন্ন করিতে পারে এইরূপ চিত্তক্রিয়াও সঙ্গে সঙ্গেই উৎপন্ন হয়। এই চিত্তক্রিয়ানিষ্পন্ন চিত্তাবস্থা পুনরায় নানা সূচনা আনিয়া দেয়—এই চিত্রের উপরে এই রকম করিব, ইহার এইখানে এইরূপ করিব, ঐখানে ঐরূপ করিব, ইহার উভয় পার্শ্বে এইরূপ করিব, এই চিত্ত ব্যাপার ও চিত্তফল অভিন্ন এবং যখনই কেহ কোন বিচিত্র শিল্প রচনা করে তখন তাহার সৃষ্টি চিত্তের দ্বারাই করিয়া থাকে। যদি বহির্জগতে চিত্তকল্পনাকে জড়ের মধ্য দিয়া প্রকাশ নাও করিত তথাপি চিত্রীর চিত্রসৃষ্টি অক্ষুন্ন থাকিত। কারণ বহির্জগতে যাহা ফুটান যায় তাহা চিত্তেরই অনুকার মাত্র এবং সেই জন্যই বহিত্রি হইতে চিত্তচিত্র প্রশস্যতর। ফল কথা এই হইল যে চিত্তের সৃষ্টি ও যাহা, তাহার অভিব্যক্তিও তাহা, তাহার প্রকাশও তাহাই। এবং যখনই আমাদের, চিত্ত কোন বিশিষ্টরূপে আপনাকে প্রকাশ করে তখন সেই রূপসৃষ্টির জগৎই আমাদের যথার্থ জগৎ। চিত্র আঁকিবার সময় বাহিরের রেখা রূপাদির বিন্যাস অন্তরের অনুকৃতি মাত্র। শিল্পীর যথার্থ সৃষ্টি তাহার চিত্তাভিদ্রুতির মধ্যে, তাহার কল্পনার মধ্যে। আশা করি ক্রোচের