পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/১২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
১০৭

চিত্তের অসংখ্যের ভাবপরম্পরা যাহা রসের অনুবর্তী বা তাহার সহিত মিশ্রিত হইয়া থাকে। ভট্টলোল্লট বলেন যে আমাদের চিত্তের মধ্যে যখন রতি, হাস, ভয়, ক্রোধ, উৎসাহ প্রভৃতি ভাব উক্তি হয় তখন তাহা বিভাবানুভাবাদির দ্বারা উপচিত হইলে তাহাকে রস বলা যায়। দণ্ডী প্রভৃতিরও এই মতই ছিল। কিন্তু শ্রীশঙ্কুক বলেন যে বিভাবাদি পূর্ব্বে না থাকিলে রসাবগতির সম্ভাবনা থাকে না। তিনি আরও বলেন যে বিভাবাদি কারণের দ্বারা যে সমস্ত অনুভাবাদি উৎপন্ন হয় তাহা দ্বারাও স্বকীয় চিত্তে তাদৃশ বিভাবানুভাবের সহিত কীদৃশ শঙ্কা, ব্রীড়া প্রভৃতি ব্যভিচারী ভাব উৎপন্ন হয়, তাহা কল্পনা করিয়া দ্রষ্টা যখন অভিনেতার ভাবকে মনের মধ্যে উপলব্ধি করে, তখনই তাহাকে রস বলা যায়। এই রসের উৎপত্তি অন্য অন্য মিথ্যাপ্রত্যয়মূলক ভ্রমের দৃষ্টান্তে ব্যাখ্যা করা যায়। যে নট রামের ভূমিকায় অবতীর্ণ সে রামও নয়, একেবারে যে অরাম তাহাও নহে, তৎসদৃশও নয়, বিসদৃশও নয় অথচ তাহার অভিনয়ের দ্বারা স্রষ্টার মনে যে একটি বিশেষ ভাব উৎপন্ন হয় তাহাকেই রস বলা যায়। ছবির ঘোড়া যেমন ঘোড়ও বটে, ঘোড়া নয়ও বটে, এখানেও তেমনি একটা প্রতীতি হইতেছে সন্দেহ নাই, অথচ তাহা তত্ত্বও নহে, ভ্রমও নহে এইরূপ নানা বিরুদ্ধ মতির সংমিশ্রণে যখন সেই বিরুদ্ধতার বিরোধটুকু গৃহীত না হইয়া একটি অখণ্ড প্রতীতি জন্মে তাহাকেই রস কহে। ইহাকে যুক্তির দ্বারা ব্যাখ্যা করা যায় না। এখানে ফলকথা এই দাঁড়াইল যে রসটি একটি