পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/১২৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১১০
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

প্রসিদ্ধি আছে। যথা শৃঙ্গার, বীর, করুণ, রৌদ্র, হাস্য, অদ্ভুত, বীভৎস, ভয়ানক ও শান্ত। বৈষ্ণবেরা বাৎসল্য ও ভক্তিরসেরও উল্লেখ করিয়া থাকেন। সমরাঙ্গণ-সুত্রে লিখিত আছে যে চৈত্রিক সমাজে প্রেমনামক প্রিয়দর্শনোত্থ আর একটি রসেরও প্রসিদ্ধি আছে। পূর্বোক্ত রসগুলি ছাড়া আর যে কারণেই মনে সহজে আনন্দ উপস্থিত হউক না কেন তাহাকে এই প্রিয়তা রসের মধ্যে অন্তর্ভাবিত করা যায়। প্রিয়তা রসের যে লক্ষণ সমরাঙ্গণ-সূত্রে দেওয়া হইয়াছে তাহা এই

“অর্থলাভ-সুতোৎপত্তি-প্রিয়দর্শনহর্ষজঃ।
সঞ্জাতপুলকোদ্ভেদো রসঃ প্রেমা সমুচ্যতে॥”

 এই লক্ষণের সাধারণ অর্থ এই যে অর্থলাভ, সুতোৎপত্তি, প্রিয়ের বা প্রিয় বস্তুর দর্শনে যে আনন্দ হয় তাহা হইতে উৎপন্ন যে রসে মানুষের শিহরণ জাগে তাহাকে প্রেমরস বলে। পুংলিঙ্গ প্রেমশব্দের অর্থ প্রিয় এবং হর্ষ অর্থাৎ প্রিয়বোধ এবং হৃদয়দ্রাবিতাবোধ। সমরাঙ্গণসূত্রের লক্ষণ দেখিয়া মনে হয় যে অন্য কোনও রসবিভাগের মধ্যে অনুক্ত, স্বার্থসম্ভূত বা নিঃস্বার্থ প্রিয়তাবোধজনিত বা হর্ষজনিত যে রস উৎপন্ন হয়, নাট্য তাপেক্ষা চিত্রে তাহার উপযোগিতা অধিক। এইজন্য চিত্রপ্রয়োগবিষয়ে এই রসকে স্বতন্ত্র ভাবে স্বীকার করা হইয়াছে। কিন্তু নাট্য অপেক্ষা চিত্রে এই রসের সমধিক উপযোগিতা কেন হইবে? নাট্যে ও দীর্ঘ বিরহের পর প্রিয়জনকে দেখিয়া আনন্দ উৎপন্ন হয়। কিন্তু সে আনন্দকে তাঁহারা শৃঙ্গারের অন্তর্ভুক্ত করিয়াছেন।