পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/১২৮

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
১১৫

রতি একটী চিত্তবৃত্তি, তাহার অনুকরণ সম্ভব নহে। নটের চিত্তবৃত্তিও দর্শকেরা অনুকরণ করিতে পারেন না। কারণ চিত্তবৃত্তিকে সাক্ষাৎ সম্বন্ধে জানা যায় না। যদি সাক্ষাৎ সম্বন্ধে জানা যাইত তবে অনুকরণেরও প্রয়োজন হইত না। প্রত্যক্ষদৃষ্ট বহিরবয়বের অনুকৃতি সম্ভব। কিন্তু কাহারও অন্তরের রস কেহ সাক্ষাৎ করিলে তাহার হৃদয়ই সেই রসাপন্ন হয় এবং সেইজন্যই সেই রসের পুনরনুকরণের সম্ভাবনা থাকে না। নট, অভিনেয় পুরুষের বাদ্যগুণ, অল্প চেষ্টায় অনুকরণ করিতে পারে, কিন্তু তাহার হৃদয়রসের সহিত তার সাক্ষাতও হয় না, অনুকৃতিও হয় না।

 এই তর্কাবলী হইতে দেখা যায় যে, শ্রীশঙ্কুক মনে করিতেন যে, যে প্রণালীতে, যে অন্তঃসহানুভূতিতে, চিত্রী তাঁহার চিত্র অনুকারের দ্বারা ফুটাইয়া তুলেন, সেই জাতীয় সহানুভূতি দ্বারাই কাব্য ও নাট্যের রস রসিকের হৃদয়কে বিদ্রুত করে। চিত্রশিল্পের সত্তা যেমন একটা অলৌকিক সত্ত, কাব্যনাট্যের সত্তাও তেমনি একটী অলৌকিক সত্তা এবং উভয় স্থলেই রসোদগমের পদ্ধতি একই প্রকারের। অভিনব গুপ্ত কাব্যনাট্যাদির রস হইতে চিত্রগত অনুকারাদিজনিত আহ্লাদকে পৃথক্ করিয়া বলেন যে, “গ্রীবাভঙ্গাভিরামং” শ্লোকটী পড়িলে যে মৃগপোতকের ছবি হৃদয়ে ফোটে, তাহা কোন বিশেষ মৃগপোতকের নহে, তাহা কোন দেশের মৃগপোতক নহে, তাহা কোন কালের বিশেষ পোতক নহে। এইরূপে বিশেষ দেশ কালাদির সহিত অসংযুক্তভাবে (দেশকালাদ্য-