প্রায় সকলেই সাদৃশ্য জ্ঞানকে ইন্দ্রিয়জ বলিয়াছেন। কিন্তু বস্তুত: ইন্দ্রিয়ের দ্বারা কেবলমাত্র বস্তুর প্রত্যক্ষস্বরূপ জানা যায়। এই প্রত্যক্ষস্বরূপের সহিত সংস্কারোদ্বোধিত স্মৃতিরূপাপন্ন বা কেবল সংস্কারাবস্থ ঈষদুদ্বোধিত চিত্তাবস্থার মধ্যে যে সমস্ত সম্বন্ধপরম্পরা ঈষদুদ্বোধিত হইয়া উঠিয়াছে তাহারই সহযোগে চিত্তের যে ব্যাপার ঘটে তাহাদ্বারাই সাদৃশ্য-বোধ জন্মিতে পারে। আমাদের দর্শনশাস্ত্রে যদিও উপমানকে স্বতন্ত্র প্রমাণ বলিয়া স্বীকার করা হইয়াছে তথাপি এই প্রমাণকে কোন গুরুতর দার্শনিক সিদ্ধান্তের উপযোগী করিয়া তোলা হয় নাই। বস্তুতঃ এই প্রমাণটির যথার্থ মর্যাদা রক্ষা করিতে হইলে ইহার তাৎপর্য্যকে একটু বিশেষভাবে অগ্রসর করিতে হয়। এই প্রমাণমতে দৃষ্ট সাধর্ম্ম্যের দ্বারা অদৃষ্টবস্তুর স্বরূপ বা পরিচয় লাভ করা যায়। এই যে দৃষ্ট এবং অদৃষ্টের মধ্যে সাধর্ম্ম্য ইহার পরিমাণ কতটুকু তাহার কোনও নির্ণয় নাই। কতটুকু সদৃশতা থাকিলে একটা হইতে অপরটার পরিচয় পাওয়া যায় তাহার স্বরূপ কেহ লক্ষণের দ্বারা বুঝাইতে পারেন না। সে পরিচয় নিজের অভিজ্ঞতা ছাড়া অন্য উপায়ে হওয়া সম্ভব নহে। তবে একথা হইতে আমাদের এই প্রতীতি জন্মে যে কোনও বস্তুর গ্রহণকালে তাহার অবয়বের যে দৈশিক সংস্থান আমাদের চিত্তের মধ্যে অঙ্কিত হইয়া যায়, সর্ব্বাংশে তৎসমধর্ম্মী না হইলেও তাহার সহিত কতকগুলি বিশিষ্ট অংশে মিল থাকিলেই তাহাকে সদৃশ বলিয়া বোধ হয়। আমরা জীবনে অনেক পাতা দেখিয়াছি! যদি তালপাতা, নারিকেল
পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/১৩৯
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১২৬
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা