পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/১৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

ইনি সকলের সকলপ্রকার ভয় হরণ করিতে সর্ব্বদা প্রস্তুত। ইনি সর্ব্বদা প্রসন্ন। কাজেই এইখানে দেখা যাইতেছে যে কেবল একটি মানুষের মূর্ত্তি গড়িয়া তাহাতে ৫টি মুখ ৩টি চক্ষু জুড়িয়া দিলেই মহেশ্বরের মূর্ত্তি হয় না। তাঁহাকে গড়িতে হইলে তাঁহার স্বাভাবিক ভয়হারিত্ব সেই মূর্ত্তির মধ্য দিয়া প্রকাশ পাওয়া চাই। এই ভাবপরিস্ফুর্ত্তি বা Expression হিন্দু, বৌদ্ধ বা জৈন মূর্ত্তি গড়িবার একটি অত্যাবশ্যক মূল কথা। কিন্তু প্রাচীন গ্রীকদের মূর্ত্তি গড়ার মধ্যে এই Expression জিনিষটির সমাদর ছিল না! প্রাচীন গ্রীকদের দেবদেবীরা সম্পূর্ণভাবে মানুষের মতনই ছিলেন। সেইজন্য তাঁহাদের মূর্ত্তি পরিকল্পনায় মানুষের শ্রেষ্ঠ সৌন্দর্য্য অনুকরণের বিধি ছিল। কালিদাস ‘কুমারসম্ভবে’ পার্ব্বতীর রূপবর্ণনাব্যপদেশে বলিয়াছেন—

সর্ব্বোপমাদ্রব্যসমুচ্চয়েন যথাপ্রদেশংবিনিবেশিতেন।
সা নির্ম্মিতা বিশ্বসৃজা প্রযত্নাদেকস্থসৌন্দর্য্যদিদৃক্ষয়েব॥

 অর্থাৎ প্রকৃতির মধ্যে যাহা কিছু যে বিষয়ে সুন্দর তাহা সমস্ত একত্র আহৃত করিয়া বিধাতা পার্ব্বতীকে গড়িয়াছিলেন। তিলোত্তমাকেও ব্রহ্মা এই প্রণালীতেই গড়িয়াছিলেন কিন্তু গ্রীকদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের দিকে দৃষ্টি ছিল না। সেইজন্য তাঁহারা যে সমস্ত মনুষ্যমূর্ত্তির পরিকল্পনা করিতেন তাহাতে মানুষের মধ্যে যেখানে যাহার শ্রেষ্ঠরূপ তাহাই আহরণ করিয়া একত্র বিন্যাস করিয়া পরিকল্পনা করিতেন। আমাদের