পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/১৫৯

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৪৬
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

উঠে। চিত্রী রোষদ্বেষমোহাদির আধিক্য হইতে বর্জ্জিত হইবেন এবং দৃশ্যমান বা ধ্যায়মান বস্তুর আনন্দে তাঁহার চিত্ত পুলকিত হইয়া উঠিবে। সেই আনন্দে তিনি ধ্যানের দ্বারা চিত্রের বস্তুকে হৃদয় মধ্যে বিধারণ করিবেন। কারয়িত্রী প্রতিভা দ্বারা তাঁহাকে রেখাবর্ণনাদিদ্বারা চিত্রপটে সন্নিবেশ করিতে একটু স্বাভাবিক পটুত্ব থাকিবে। এই স্বাভাবিক পটুত্বকে অভ্যাস ও গুরূপদেশের দ্বারা তিনি সৎকৃত করিবেন। চিত্তের নিয়োগানুসারে হাতকে যথাযথভাবে চালাইতে হইলে প্রতিভা ও অভ্যাস সহায়ক হয়। ইয়োরাপীয় সৌন্দর্য্যতত্ত্ববিৎ ক্রোচে বলিয়াছেন যে চিত্রীর মনে যে ধ্যানরূপে চিত্রেয় বস্তু বিধৃত হয় তাহারই মধ্যে যুগপৎ সেই চিত্রেয় বস্তুর প্রকাশযোগ্য রেখাও বর্ণাবলীও তৎসহিতই একই কালে চিত্তের মধ্যে উপনীত হয়। এই মত পোষণ করেন বলিয়া চিত্র আঁকিবার যে বিশেষ দক্ষতার প্রয়োজন, মনের রূপকে বাহিরের রূপ দিবার যে বিশেষ কৌশল ও অভ্যাসনিষ্পন্ন দাক্ষ্যের প্রয়োজন সে বিষয়ে তিনি একপ্রকার কিছুই বলেন নাই। কাব্য প্রসঙ্গে বলিতে গিয়া জগন্নাথ পণ্ডিত প্রতিভার লক্ষণ দিয়াছেন—“কাব্যঘটনানুকূলশব্দার্থোপিস্থিতিঃ”। তিনি আরও বলেন, এই প্রতিভার কোনও স্বরূপ নির্ণয় করা যায় না। ইহা একটি অখণ্ড জাতিবিশেষ বা উপাধিস্বরূপ (unanalysable character) “প্রতিভাত্বং কাব্যকারণতাবচ্ছেদকতয়া সিদ্ধো জাতিবিশেষ উপাধিস্বরূপং বাখণ্ডম্‌” কিন্তু রাজশেখর বলেন যে সমাধি ও অভ্যাস এই উভয় হইতে যে শক্তি উদ্ভাসিত হয়