পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/১৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

সাহিত্যে একদিকে যেমন প্রকৃতি হইতে সৌন্দর্য্য আহরণ করিতে একত্র সন্নিবেশের দ্বারা সুন্দরমূর্ত্তি পরিকল্পনার কথা আছে, অপরদিকে তেমনি অন্তরের ধ্যানপরিকল্পিত রূপকে বাহিরের মূর্ত্তি প্রদান করিলে যে শ্রেষ্ঠ সৌন্দর্য্য উৎপন্ন করা যায় তাহার কথাও উল্লিখিত আছে। শকুন্তলার রূপ বর্ণনা করিতে গিয়া কালিদাস বলিতেছেন,—

চিত্তে নিবেশ্য পরিকল্পিতসত্ত্বযোগা
রূপোচ্চয়েন মনসা বিধিনা কৃতানু।

 অর্থাৎ বিধাতা তাঁহার চিত্তের মধ্যে যে মূর্ত্তিটি প্রত্যক্ষ করিয়াছিলেন সমগ্র রূপসম্ভার দিয়া এবং তাহাতে প্রাণসংযোগ করিয়া শকুন্তলাকে গড়িয়াছিলেন। ভাবসন্নিবেশ না থাকিলে যে চিত্রের সাফল্য হয় না তাহা বর্ণনা করিতে গিয়া কালিদাস বিদূষকের মুখে দুষ্যন্তের চিত্রের প্রশংসাস্থলে বলিতেছেন—‘সাহু বঅস্‌স মহুরাবস্থাণদংসনিজ্জো ভাবাণুপ্পবেসা।’ যদিও ভাব বা personality এবং emotionএর প্রকাশ (expression) চিত্রের একটি প্রধান অঙ্গ বলিয়া পরিগণিত হইত তথাপি প্রকৃতের যথানুবর্তিতার দিকেও চিত্রীর দৃষ্টি রাখিতে হইত। সানুমতী দুষ্যন্তের চিত্র দেখিয়া বলিতেছেন যে মনে হইতেছে যেন সখী শকুন্তলা সম্মুখেই রহিয়াছে। ভ্রমর দেখিয়া বিদূষকের এমন ভ্রম হইয়াছিল যে সে দণ্ডকাষ্ঠের দ্বারা তাহাকে মারিতে উদ্যত হইয়াছিল। ইহা ছাড়া perspective বা দেশবিনিবেশ ব্যবস্থাও লঙ্ঘিত হইত না।