পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/১৭০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
১৫৭

সেইজন্যই এই জাতীয় চাওয়াকে যাহা পরিতৃপ্ত করিতে পারে সে তাহাকে অধিক মূল্য দেয়। আমরা পূর্ব্বেই বলিয়াছি যে মানুষ রূপসৃষ্টির কালে ধ্যানের দ্বারা, স্মৃতি দ্বারা, সমাধির দ্বারা ও “তচ্চেতসা স্মরতি নূনমবোধপূর্ব্বম” এতজ্জাতীয় সংস্কারের অস্ফুট আলোকের দ্বারা আপনাকে রেখায়, বর্ণে ও ভাষায় প্রকাশ করিতে চায় ও যাহা প্রকাশ করে তাহার সহিত আপনাকে পরিচিত করিতে চায়। এই প্রকাশ ও পরিচয়ব্যাপারে তাহার কোনও দৈহিক প্রয়োজনের সিদ্ধি হয় না এবং তাহার প্রয়োজনও রাখে না। কিন্তু তথাপি এই প্রকাশের জন্য, এই অনুভবের জন্য, তাহার চিত্তের মধ্যে এমন একটী প্রবল ইচ্ছা রহিয়াছে, এমন একটী গভীর বেদনা রহিয়াছে যাহার পূরণ ও শান্তি না হইলে সে তাহার জীবনকে বিফল মনে করে। সমগ্র জীবনের কামনা যেন পুঞ্জীভূত হইয়া, একমুখী হইয়া এই সৃষ্টি ব্যাপারের মধ্যে আপনাকে প্রকাশ করিয়া তুলিতে চায়। যদিও এই কামনার মধ্যে নানা সূক্ষ্ম সূক্ষ্ম বিভাগের কথা আমরা পূর্ব্বেই বিশ্লেষণ করিয়া দেখাইয়াছি, তথাপি অঙ্গাঙ্গিভাবে ওতপ্রোত হইয়া এমন সামঞ্জস্যে ও ঐক্যে তাহারা কাজ করে যে, মনে হয় যে তাহারা যেন একটী অবিশ্লেষ্য ইন্দ্রিয়বৃত্তি। এইজন্য কবিত্বশক্তি বা চিত্রকারিত্বশক্তিকে অনেকে কেবলমাত্র চিত্রপ্রতিভা বা কবিত্বপ্রতিভা বলিয়া বর্ণনা করিয়াছেন। জগন্নাথ পণ্ডিত বলিয়াছেন যে, কেবলমাত্র কবিপ্রতিভাই কাব্য প্রণয়নের কারণ। এখানে একমাত্র প্রতিভা দ্বারা কবির সৃষ্টিকার্য্যের নানা শক্তি