পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

আনিবার চেষ্টায় মূর্ত্তিগুলি তাহাদের স্বাভাবিকতা হারাইয়া চিত্রজগতের বিশেষ স্বরূপ লইয়া ও ভাবব্যঞ্জনার বিশেষ বিশেষ প্রতীক হইয়া দাঁড়াইতে লাগিল। শিল্পজগতের নূতন ভাষার সহিত আপনাকে খাপ খাওয়াইবার চেষ্টায় মূর্ত্তিগুলির মধ্যে শৈল্পিক ভাবের সামঞ্জস্য প্রাকৃতিক বাস্তব সামঞ্জস্যের স্থান অধিকার করিতে লাগিল। কিন্তু গুপ্তদের সময় হইতেই এই অভিব্যঞ্জনাপ্রধান মূর্ত্তিসৃষ্টি ক্রমশঃ আবার একটু একটু করিয়া বাস্তবের দিকে নামিয়া আসিতে লাগিল। আমাদের দেশের নানাবিধ দেবদেবীর মূর্ত্তি সৃষ্টির মধ্যে কি পরিকল্পনা ও কি ভাব অভিব্যঞ্জিত করিবার চেষ্টা করা হইয়াছিল তাহা এখন বিশেষভাবে বুঝিবার উপায় নাই। যে আদিকালে ঐ সমস্ত মূর্ত্তি সৃষ্ট হইয়াছিল, সে সময়ে সাধকের চিত্তের সহিত শিল্পীচিত্তের যোগ ছিল এবং সাধকের চিত্তের কল্পনা শিল্পী তাহার মূর্ত্তি নির্ম্মানের ইঙ্গিতের মধ্য দিয়া প্রকাশ করিত। ঐ ইঙ্গিত সেকালে বিদগ্ধ সমাজে সুখ্যাত ও সুপরিচিত ছিল, কিন্তু পরবর্ত্তীকালে যখন লোকে ঐ সমস্ত ইঙ্গিত বিস্মৃত হইল তখন শিল্পশাস্ত্র বা আগম শাস্ত্রের বাঁধাধরা নিয়মপদ্ধতির মধ্য দিয়া প্রাচীন পদ্ধতিগুলি রক্ষিত হইল বটে কিন্তু কি কারণে কোন্ মূর্ত্তিকে কি প্রকার গঠন দেওয়া হইল সে সম্বন্ধে লোকে আর কোনও লক্ষ্য রাখিত না। ঐসব সময়ের গ্রন্থ পড়িলে দেখা যায় যে অমুক অমুক দেবদেবীমূর্ত্তি অমুক অমুক প্রণালীতে বা পদ্ধতিতে গঠন করিতে হইবে এবং তাহা না করিলে সেই সেই পূজার ফল হইবে না,—