পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৩১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
১৮
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

একদিকে যেমন তাহাদের অতিপ্রাকৃতত্ব সূচিত হয়, অপরদিকে তেমনি প্রাণধর্ম্মের সমগ্র চিত্রের সহিত তাহাদের একটি সামঞ্জস্য রাখিতে চেষ্টা করেন। যেখানে ইয়োরোপীয় চিত্রী তাহার সামঞ্জস্য খোঁজেন প্রাকৃত জীবনের মধ্যে, সেইখানে ভারতীয় চিত্রী তাঁহার সামঞ্জস্য খোঁজেন ধ্যানাহিত অন্তর্লোকের ঐক্যপরিস্পন্দের মধ্যে। বাহিরের সহিত কতটুকু মিলিল না মিলিল তাহা দেখিবার তেমন প্রয়োজন নাই, রেখাসন্নিবেশের দ্বারা তাহারা যদি সূচিত হয় তবেই যথেষ্ট। চিত্রী দেখিবেন যে তত্ত্বটি, যে রসটি, যে ভাবাবেশটি তিনি হৃদয়ে বিধারণ করিয়াছেন, তাহার মধ্যে যে সামঞ্জস্য রহিয়াছে চিত্রে প্রকাশিত ইঙ্গিতের মধ্য দিয়া সেই সামঞ্জস্যটি তাঁহার বা তদ্ভাবাভাবিত দর্শকের নিকট স্ফুট হইল কি না। তাই ভারতীয় চিত্রী নিজের কোন individuality বা ব্যক্তিগত জীবনের মতের বা বিশ্বাসের বা অনুরাগ-বিরাগের ছবি আঁকিয়া তুলিতে চেষ্টা করিতেন না। সমগ্র দেশের চিত্তের মধ্যে, ধ্যানীর চিত্তের মধ্যে, সাধকের চিত্তের মধ্যে যাহা চিরন্তন সত্যরূপে জাগ্রত রহিয়াছে তাহাকেই মূর্ত্ত করিয়া তুলিয়া তাহারই অন্তর্জাগরণের সাহায্য করিতে চিত্রী যত্নবান হইতেন। সৌন্দর্য্য আঁকা তাঁহার উদ্দেশ্য ছিল না, তাঁহাদের উদ্দেশ্য ছিল ধ্যানের মধ্যে যাহা প্রাণময় হইয়া রহিয়াছে সেই সত্যটিকে চিত্রের ভাষায় প্রাণময় করিয়া তুলিয়া লোকের নিকট উপস্থাপিত করা।

 অনেকে মনে করেন যে ভারতীয় চিত্রপদ্ধতিতে প্রকৃতের