পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৩২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
১৯

অনুকরণের কোনও ধারণা ছিল না, কিন্তু একথা ঠিক নহে। চিত্র এবং নৃত্য এই উভয়কেই তাঁহারা একজাতীয় মনে করিতেন এবং উভয়কেই তাঁহারা প্রকৃতির অনুকরণ বলিয়া মনে করিতেন। নৃত্যের উৎপত্তিবিষয়ে বলিতে গিয়া বিষ্ণুধর্ম্মোত্তর পুরাণে বর্ণিত হইয়াছে যে প্রলয়ের সময় ভগবান নারায়ণ বেদোদ্ধারের জন্য যে অনন্ত জলাশয়ে বিবিধ ভঙ্গীতে চংক্রমণ করিয়াছেন, তাঁহার সেই স্বচ্ছন্দ সাবলীল গতিতেই নৃত্যের উৎপত্তি। বোধহয় তাৎপর্য্য এই যে, যে সাবলীল প্রাণের ক্রিয়াতে সমগ্র জগৎ উৎপন্ন হইয়াছে এবং বিধৃত রহিয়াছে সেই প্রাণপরিস্পন্দন ব্যাপারেই ত্রৈলোক্যের স্বরূপ এবং সেই প্রাণব্যাপারের অনুকরণ। এইজন্যই নৃত্য এবং চিত্র উভয়কেই ত্রৈলোক্যের অনুকৃতি বলিয়া বর্ণনা করা হইয়াছে। চিত্রসূত্রে লিখিত আছে—

“যথা নৃত্যে তথা চিত্রে ত্রৈলোক্যানুকৃতিঃ স্মৃতা।
দৃষ্টয়শ্চ তথা ভাবা অঙ্গোপাঙ্গানি সর্ব্বশঃ॥
করাশ্চ যে মহানৃত্যে পূর্ব্বোক্তা নৃপসত্তম
ত এব চিত্রে বিজ্ঞেয়া নৃত্যং চিত্রং পরং মতম্‌॥”

 তাৎপর্য্য এই, নৃত্য এবং চিত্র উভয়েতেই ত্রৈলোক্যের অনুকৃতি দেখা যায়। যে সমস্ত দৃষ্টিভঙ্গী অন্তরের নানাবিধ ভাব অঙ্গ ও উপাঙ্গের নানা সংস্থানবৈচিত্র্য ও হস্তাদির নানা বিক্ষেপক্রিয়ার কথা নৃত্যপ্রকরণে কথিত হইয়াছে চিত্রেও