পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৫২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
৩৯

বা পরস্পর প্রতিস্পর্দ্ধিতায় যে সামঞ্জস্য ঘটে সেইজাতীয় সামঞ্জস্যকে প্রস্ফুট করিতে চেষ্টা করিতেন। Rembrandt-এর যে ছবিখানার কথা উল্লেখ করা হইয়াছে তাহাতে Pilate প্রভৃতি পুরোহিতেরা, সৈনিকেরা, যীশুখৃষ্ট এবং Caesar-এর প্রকাণ্ড মূর্ত্তি সকলেই আপন আপন পৃথক্‌ পৃথক্‌ অভিনয় করিয়া যাইতেছেন। সেই অভিনয়ের যৌগপদ্যে তৎকালিক একটি ক্ষণের বিচারদৃশ্য ফুটিয়া উঠিয়াছে। কিন্তু চিত্রী এমন কোনও বিশিষ্ট চৈত্তিক অবস্থা দ্যোতিত করিতে চেষ্টা করেন নাই, যাহার অভাবে চিত্রের প্রত্যেকটি মূর্তি অভিভূত হইয়াছে। চিত্রের মধ্যে কাহার যে প্রাধান্য বা কি ভাবের প্রাধান্য তাহা বলা যায় না। পৃথক্‌ পৃথক্‌ মূর্তিগুলির পরস্পর দ্বন্দ্বে ও প্রতিযোগিতায় একটি ক্ষণের একটি সমগ্র অবস্থা দ্যোতিত হইয়াছে। ভারতীয় বহু পুরুষ সমন্বিত কোনও একটি প্রসিদ্ধ শিল্প আলোচনা করিলে দেখা যাইবে যে সেখানে একটি কোনও বিশেষ ভাবই অঙ্গী হইয়া দাড়াইয়াছে, অন্য সমস্ত ভাবের মূর্তিগুলি তারই অনুকূলতায় আত্মনিয়োগ করিয়াছে। নানা রস যে এক রসকে স্ফুরিত করিবার জন্য আবশ্যক হয় এবং ওইখানেই যে নানারসের সার্থকতা এইটিই ছিল ভারতীয়দের বিশেষ লক্ষ্য। তথাপি ভারতীয় সমস্ত চিত্রের সম্বন্ধেই যে একথা বলা চলে তাহা নহে। ইয়োরোপীয়দের হইতে ভারতীয়দের এইখানেই একটি বৈশিষ্ট্য ছিল বলিয়াই এই বিশেষ ধর্মটির উপর একটু অতিরিক্ত জোর দিয়া বলা হইল।