পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৫৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৪২
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

ন্যায়, মৃতকে মৃতের ন্যায়, চৈতন্যহীনকে চৈতন্যহীনের ন্যায়, উচচ স্থানকে উচ্চ স্থানের ন্যায়, নিম্ন স্থানকে নিম্ন স্থানের ন্যায় ও একটি যে অপরটি হইতে বিভক্ত হইয়া আসিতেছে তাহাকে চিত্রে ফুটাইয়া তুলিতে পারে তাহাকে চিত্রজ্ঞ বলা যাইতে পারে। এইসঙ্গে ইহাও কথিত আছে যে, চিত্রে যে সমস্ত মূ্র্ত্তি প্রদর্শন করা হইবে সেইগুলিকে তাহাদের পরস্পরের সহিত যে সম্বন্ধ তাহারই আনুলোম্যে আঁকিতে হইবে; অর্থাৎ কেহ যদি কাহারও দিকে বাঁকিয়া দাঁড়াইয়া কথা বলে,—কেহ যদি পাশ ফিরিয়া থাকে তবে সেই প্রকৃত অবস্থার অনুলোম্যেই সেগুলি অঙ্কিত করিতে হইবে। সকলেই যেন চিত্রীর দিকে চাহিয়া আছে এরূপ করিয়া আঁকিলে চলিবে না। এই রকম বিবৃত্ত বা পার্শ্ববর্ত্তী ভাবে নানা ভঙ্গিতে ছবি আঁকিতে গেলে খানিকটা পরিমাণে দৈশিক অবস্থা বিন্যাসের (perspective) বোধ না থাকিলে আঁকা যায় না। এই সম্বন্ধে চিত্রসূত্র বলিতেছে,— “এতেষাং খলু সর্ব্বেষামানুলোম্যং প্রশস্যতে। সন্মুখত্বমথৈতেষাং চিত্রে যত্না বিবর্জ্জয়েৎ॥” চিত্রীরা কেবলমাত্র যে সুবর্ণ, রৌপ্য, তাম্র, লোহা, শিলা ও দারুর মূর্ত্তি করিতেন বা কেবল রং দিয়া ছবি আঁকিতেন তাহা নহে, অনেকে এমন ছিলেন যাঁহারা মুহূর্ত্তমধ্যে বায়ুবেগে কেবলমাত্র কয়েকটি রেখা দ্বারা প্রতিকৃতি আঁকিতে পারিতেন,—তাহাদিগকে বলা হইত মত্তচিত্রবিৎ।—“বায়ুগত্যা লিখেদ্ যস্তু বিজ্ঞয়ো মত্তচিত্রবিৎ।” ইহা ছাড়া নানা প্রকারের বস্ত্র ও কুড্যভিত্তিতে চিত্র আঁকিবার বিধি ছিল।