পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৬৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
৫৩

কাশকে গোলককল্প স্থৌল্যের (polygonal planes) মধ্য দিয়া প্রকাশ করিতে চেষ্টা করিতেন। চীনারা ডিম্বাকৃতি আকাশের (elliptical planes) মধ্য দিয়া স্থৌল্যকে প্রকাশ করিতে চেষ্টা করিতেন। ভারতীয়ের ধ্যানধৃত অন্তরাকাশের সঞ্চারি স্থেল্যের {dynamic psychological volume) মধ্য দিয়া প্রকাশ করিতে চেষ্টা করিতেন। এইজন্য গ্রীকৃশিল্পের চক্ষুতে যাহারা চিত্ত অনুরঞ্জিত করিয়াছেন তাঁহাদের পক্ষে ভারতীয় শিল্প বোঝা এত কঠিন যে অতি দীর্ঘকাল পর্যন্ত ইয়োরোপীয়েরা ভারতীয় শিল্পের মাধুর্য বুঝিতেন না। অতি অল্পদিন হইল এই সম্বন্ধে অল্প কয়েকজন ইয়োরোপীয় বিদগ্ধ ব্যক্তি সচেতন হইয়া উঠিতেছেন। আমরা চক্ষুতে যখন রূপ দেখি তখন সেই রূপের সহিত মিলিত হইয়া প্রকাশ পায় একটি বিশিষ্ট জাতীয় আকাশ, যাহার সহিত জড়িত হইয়া সেই রূপ আত্মপরিচয় দেয়। রেখার দ্বারা, আলোছায়ার বিন্যাসের দ্বারা ও রংএর দ্বারা এই আকাশের বিভিন্ন ভাগের সহিত অবয়বসন্নিবেশের ও সন্নিহিত তজ্জাতীয় অন্য আকার অবয়বের সহিতও আমাদের পরিচয় ঘটে। আমার মনে হয় যে কেবলমাত্র দৃশ্যশিল্পের বেলায় নহে, শ্রব্যশিল্পের বেলায়ও এইরকম একটি আকাশপরিচয় ঘটিয়া থাকে। কোন একটি গান শুনিলে বা কোন একটি কাব্য পড়িলে মনের মধ্যে ভাব ও অর্থ মিলিয়া যেন কিছু একটা মূর্ত্তি গড়িয়া ওঠে। এই মূর্তির সঙ্গে দৃশ্যমূর্ত্তির সাদৃশ্য আছে, দৃশ্যমূর্ত্তি রং লইয়া, রেখা লইয়া, আলোছায়া লইয়া