পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৭৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৬০
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

শুচি ও পবিত্র হইয়া চিত্রাঙ্কনে প্রবৃত্ত হইবেন। আমাদের দর্শনশাস্ত্রের একটি মোটা কথা এই যে আমাদের চিত্তের বা বুদ্ধির আলোড়ন কেবলমাত্র দৈহিক গতিরই কারণ নহে, পরন্তু তাহাই পঞ্চ প্রাণবৃত্তির—আমাদের জীবনীশক্তির প্রবাহের কারণ। পাশ্চাত্যচিত্রবিৎ Leonardo এইটুকু ধরিতে পারিয়াছিলেন যে মনের গতির সঙ্গে সঙ্গে দেহাবয়বের সূক্ষ্ম গতি চলিতে থাকে, কিন্তু মনের গতি যে প্রাণশক্তির কারণ এবং মনের মধ্যেই যে সমস্ত প্রাণপ্রবাহ রহিয়াছে এই সুগভীর দার্শনিক তত্ত্বের মধ্যে ইয়োরোপীয় চিত্রীরা স্পষ্টতঃ প্রবেশ করিতে পারেন নাই। ভারতীয় শিল্পীর চক্ষুতে উদ্ভিদ প্রাণী ও মানুষ তিনের মধ্যেই এক প্রাণলীলা চলিয়াছে ও তিনের মধ্যেই এক চৈতন্যলীলা অবস্থাভেদে আপনাকে প্রকাশ করিতেছে। কোন সময় বা তাহা লুপ্ত, কোথাও অর্দ্ধলুপ্ত, কোথাও জাগ্রত। গাছে গাছে লতায় লতায়, প্রাণীতে প্রাণীতে, মনুষ্যে প্রাণীতে অবয়বসন্ধানের বৈচিত্রপ্রযুক্ত, ও অবয়বস্বরূপের বৈচিত্রাপ্রযুক্ত প্রাণলীলা প্রবাহের নানা বৈচিত্র দেখা যায়। কিন্তু একই প্রাণলীলার নর্ত্তন সমগ্র প্রাণজগতে নানা তাণ্ডবে ও লাস্যে নৃত্য করিয়া চলিয়াছে। কোন চিত্রী অবয়বের স্বরূপ বা সন্নিবেশকে উপেক্ষা করিতে পারিতেন না, কিন্তু সেই সঙ্গে সঙ্গে কাহারও অবয়ববিশেষকে এমন অধিকতর স্ফুট করিবার তাঁর অধিকার নাই যাহাতে সমগ্র প্রাণজগতের সহিত তাহার যে চিরন্তন যোগ ও সাদৃশ্য তাহা ব্যাহত হইতে পারে। ইংরাজীতে বলিতে গেলে আমি বলিব যে,