পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৯১

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৭৮
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

অমরাবতীতে যে সমস্ত প্রাকৃত চিত্র দেখা যায় স্ত্রীসৌন্দর্য্যের যে অপরূপ মাধুর্য ও লাবণ্য এখানে ফুটিয়া উঠিয়াছে তাহা বিস্ময়কর। একটি চিত্রে একটি মত্ত হস্তী বুদ্ধকে আক্রমণ করিতে আসিয়াছে, তাহাতে একদিকে যেমন ভীত জনতার সন্ত্র পলায়নপরতা অপরদিকে তেমনি মত্তহস্তীর গভীর রোষ অতি জীবন্ত ভাবে প্রকাশ করা হইয়াছে। সঙ্গে সঙ্গে বুদ্ধের প্রশান্ত কোমলতা সুচারুরূপে অঙ্কিত রহিয়াছে। সমগ্রভাবে অমরাবতীর চিত্রগুলির দিকে দৃষ্টি নিক্ষেপ করিলে বুঝা যায় যে কেমন করিয়া তাহার মধ্যে ক্রমশঃ চিত্রের অন্তরের দিকটি, তাহার ভাব্যঞ্জকতার দিকটি প্রস্ফুট হইয়া উঠিয়াছে। সাঁচীর খোদিত ভাস্কর্যে দেখিতে পাই প্রাকৃতিক জীবজন্তুর সহিত গভীর সহানুভূতি এবং সেই সঙ্গে প্রাকৃতিক আকারের সহিত সৌসাদৃশ্য এবং সেখানকার বর্ণনীয় বিষয় প্রধানতঃ প্রাচীন আখ্যান। কিন্তু অমরাবতী শিল্পের বর্ণনার মধ্যে প্রাচীন আখ্যান ছাড়া শিল্পীর মনঃকল্পনাও স্থান পাইয়াছে। শিল্পী এখানে তাহার মনোভাবকে তাঁহার শিল্পের মধ্যে প্রকাশ করিতে শিখিয়াছেন। এই শিল্প সম্বন্ধে বলিতে গিয়া René Grousset বলিয়াছেন —The purely naturalistic art of Sanchi has now become spiritualised by higher influence which has raised life to a higher plane and attained an idealism of the highest order. (Ibid, page, 137). অমরাবতীতে যে ধারার শিল্প চলিতেছিল গুপ্তযুগের শিল্পে সেই ধারারই চরম পরিণতি ঘটে।