পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৯২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা
৭৯

অমরাবতীর শিল্প ছিল মানবতার জীবনের চাঞ্চল্যে পরিপূর্ণ। গুপ্তশিল্পীরা এই চাঞ্চল্যকে আধ্যাত্মিক শান্তির মধ্য দিয়া রূপ দিতে চেষ্টা করিয়াছিলেন। ওদের রাজত্বকাল ছিল চতুর্থ শতকে। এই সময়েই বৌদ্ধযুগের দর্শনশাস্ত্রের সৰ্বোচ্চ প্রাদুর্ভাব। এই সময়ে ছিলেন অসঙ্গ, বসুবন্ধু, দিঙ্ নাগ প্রভৃতি ভুবন বিখ্যাত বৌদ্ধ দার্শনিকগণ। হিন্দুদের অনেক সূত্রগ্রন্থ ইহারই কিঞ্চিৎ অগ্রপশ্চাৎ লিখিত হইয়াছিল। ধর্ম ও দর্শনশাস্ত্রের প্রভাবে সমগ্রদেশে একটি নূতন জাগরণ আসিয়াছিল। গুপ্তশিল্পীরা ভারতীয় নানাদেশীয় লোকের নানাজাতীয় বেশভূষা সম্বন্ধেই পরিচিত ছিলেন এবং মানুষের দেহ সম্বন্ধেও তাঁহাদের যথেষ্ট জ্ঞান ছিল। (Some notes on Indian Artistic Anatomy by Abanindranath Tagore, published by Indian Society of Oriental Art. Cal, 1913). সেই সঙ্গে ভারতবর্ষীয় নরনারীর শরীরের মধ্যে যে একটা স্বাভাবিক কোমলতা আছে সে বিষয়েও তাঁহাদের দৃষ্টি আকৃষ্ট হইয়াছিল। শরীরাবয়বের প্রমাণ গ্রহণের জন্য তাঁহারা গ্রীকদের জ্যামিতিক পরিমাণ গ্রহণ করিতেন না। তাহারা জীবনকে প্রকাশ করিতে চেষ্টা করিতেন পত্রাকৃতি রেখাদ্বারা। প্রকৃতির মধ্যে আমরা কোথাও জ্যামিতিক সরল রেখা দেখি না। প্রকৃতির মধ্যে আমরা দেখি জীবনের গতি হেলিয়া দুলিয়া দুলিয়া ঢলিয়া বঙ্কিমরেখায় চঞ্চল হইয়া প্রবাহিত হইতেছে,—সে কোথাও স্থির গতিতে সরলরেখার পথে ধাবিত হয় নাই। একটি প্রাণিশরীরকে লইলে আমরা দেখি যে তাহার