পাতা:ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা.pdf/৯৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা হয়েছে, কিন্তু বৈধকরণ করা হয়নি।
৮০
ভারতীয় প্রাচীন চিত্রকলা

চর্ম্মের শিখা ধরিয়া নানাঠামে বঙ্কিম রেখা ছুটিয়া চলিয়াছে। এই প্রকৃতির রেখার মধ্য দিয়াই প্রকৃতির জীবন ফুটিয়া উঠিয়াছে সেইজন্য জীবনকে অভিব্যঞ্জন করিবার জন্য গুপ্তযুগের শিল্পীরা পত্রাকৃতি বঙ্কিম রেখার সঙ্কেত ও ইঙ্গিত অবলম্বন করিতেন। সেইজন্য মুখের আকৃতি তাহারা করিতেন বর্ত্তুল, ললাটকে আঁকিতেন ধনুরাকৃতিক করিয়া এবং তাহারই সামঞ্জস্যে ভ্রূযুগলকেও চাপাকৃতি করিয়া তুলিতেন। অধরোষ্ঠ আঁকিতেন বিশ্বফলের ন্যায়, কামিনীর দৃষ্টি আঁকিতেন হরিণলোচনের ন্যায়, গ্রীবা আঁকিতেন মরালের ন্যায়, উরু আঁকিতেন হস্তিশুণ্ডের ন্যায়, কটী আঁকিতেন ডমরুর ন্যায়, বাহু আঁকিতেন মৃণালের ন্যায়, অঙ্গুলী আঁকিতেন চাঁপাফুলের ন্যায়। আবার পুরুষের বেলা স্কন্ধ আঁকিতেন বৃষের ন্যায়, বক্ষ আঁকিতেন নগরের কপাটের ন্যায়, দীর্ঘ হস্ত আঁকিতেন অৰ্গলের ন্যায়। স্ত্রীলোকের চিত্র আঁকিতে গেলে প্রায়ই তাকে ত্রিভঙ্গ আঁকিতেন। এমনি করিয়া সমগ্রদেহের নানা অবয়বকে প্রকৃতিলোকের পত্রপুষ্পফলাদির রেখাবিন্যাসের সাদৃশ্যে গুপ্তশিল্পীরা মনুষ্যজীবনের অভিব্যঞ্জনা করিতেন এবং এই উপায়েই তাঁহারা জৈব ও উদ্ভিদ্‌ প্রকৃতির সামঞ্জস্যে মানুষের রূপ দিতেন। কোনও স্ত্রীলোকের ভঙ্গী দিতে গেলে তাহার মাথাটি ডানদিকে হেলাইতেন, পীনোন্নত পয়োধরের ভার পড়িত বাঁয়ের দিকে এবং পার্শ্ববিন্যস্ত করিয়া নিতম্বের ভারকে পদযুগলের উপর সংরক্ষিত করিতেন এবং ইহার বিপরীত ঢঙে পুরুষের ভঙ্গী সম্পাদন করিতেন। সেইজন্য মানুষের সমগ্র ভঙ্গির মধ্যে ঋজুতা