পাতা:ভারতীয় স্মৃতি কথা ও চিত্র - সমরেন্দ্রচন্দ্র দেববর্মণ.pdf/১৬৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

জোছিভাঙ্গ দুর্গ క్స তৎপরবর্তী দুৰ্গাধিপতিগণের সময় নিৰ্ম্মিত হইয়া থাকিবে। উক্ত নিকেতনাদির ভগ্নাবশেষ মধ্যে যে একটা অতি জীর্ণ ধ্বংশ কবলে পতিত প্রস্তর ভবন অবস্থিত, তাহাকে রোহিতাশ্বের সময় নিৰ্ম্মিত বলিয়া লোকে নির্দেশ করে। যাহা হউক ইহার সত্যত নিৰ্দ্ধারণ করা দুষ্কর হইলেও, এই ভয় নিকেতন যে অতি প্রাচীন সেই বিষয়ে কোন সন্দেহ নাই। প্রাচীন কালের প্রস্তর নিৰ্ম্মিত সৌধমালার যে সমস্ত ভগ্নাবশেষ পুরাতন দিল্লীতে কুতুবমিনারের নিকট অবস্থিত, বর্ণিত বিধ্বস্ত নিকেনতট প্রায় তদনুরূপ । কেবল—ঐ সমুদয় ভগ্ন সৌধমালার ন্যায় ইহাতে শিল্পকৌশল পরিলক্ষিত হয় না। ইদানীং “রোহতাস গড়” নামে স্থপ্রসিদ্ধ পূর্ববর্ণিত দুগ শের খার করায়ত্ত থাকিবার সময়-জামে মসজিদ অর্থাৎ সর্বসাধারণের ভজনালয় হবশ, খার মকবর প্রভৃতি মুসলমানগণের সমাধিমন্দির ও মসজিদ তৎকর্তৃক দুগাভ্যন্তরে নিৰ্ম্মিত হইয়াছিল। অধুনা ঐ সমুদয়ের অবস্থা বিশেষ সুবিধাজনক নহে । অতি শোচনীয় দশাগ্রস্ত যে একটা মসজিদের ভগ্নাবশেষ এই স্থানে দৃষ্ট হয়, উহা ঔরঙ্গজেব কর্তৃক নিৰ্ম্মিত মসজিদের বিধ্বস্ত অংশ বলিয়া কথিত হয় । বর্ণিত রোহিতাশ্ব দুগ-মধ্যে অম্বরাধিপতি মানসিংহ যে সমুদয় সৌধমালা নিৰ্ম্মাণ করিয়াছিলেন, তাহার অল্পদুরে—পৰ্ব্বত-পৃষ্ঠের পশ্চিম প্রান্তে, সহস্রাধিক ফিট গভীর এক বিবর দৃষ্ট্রিপথে পতিত হয়। জনসাধারণ ইহাকে “দরবেশের কবর” নামে অভিহিত করে। উক্ত গহবরের এই আখ্যা প্রাপ্তির সম্বন্ধে এবংবিধ প্রবাদ প্রচলিত আছে যে, শৃঙ্খলাবদ্ধ হস্ত-পদ জনৈক দরবেশ বর্ণিত কন্দয়-মধ্যে তিনবার বিক্ষিপ্ত হইয়াছিল ; কিন্তু তিনবারই ঐ দরবেশ অক্ষত দেহে গহবর নিম্ন হইতে নিগত হয়, এই কারণ বশতঃই ইহা “দরবেশের কবর” নামে প্রসিদ্ধ হইয়াছে । দুগের অভ্যন্তরে যে সমস্ত জলাশয় দৃষ্টিপথে পতিত হয়, ঐ সমুদয় রোহিতাশ্বের সময় খনিত হইয়াছিল –এইরূপ জনশ্রুতি প্রচলিত আছে। ।