পাতা:ভারতীয় স্মৃতি কথা ও চিত্র - সমরেন্দ্রচন্দ্র দেববর্মণ.pdf/২২

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

বল্লভণী গড় i I مه প্রচণ্ডবেগে আক্রমণে বর্ণিত দুর্গ ও তন্মধ্যস্থিত রাজনিকেতনাদি সমস্তই বিধ্বস্ত হয় । দুর্গাদির ভগ্নাবশেষ যাহা কিছু বিদ্যমান ছিল, সেই সমুদয় কালক্রমে আরও জীর্ণ হইয়া ইদানীং অতি শোচনীয় দশা প্রাপ্ত হইয়াছে । দুর্গটীর ধ্বংসাবশিষ্ট প্রস্তর নিৰ্ম্মিত প্রাকারের অধিকাংশই আবর্জন রাশিতে আবৃত হইয়া এরূপ জঙ্গলময় হইয়াছে যে দূর হইতে ঐ প্রাকার লক্ষ্য করাই দুষ্কর। কণ্টকসঙ্কুল গুল্মলতাদিতে পরিপূর্ণ দুর্গাভ্যন্তরের কোন কোন স্থানে বিকীর্ণ ভগ্নস্তম্ভাদি এবং বৃক্ষলতাদিতে পরিবৃত দুই এক খানি প্রস্তরনিৰ্ম্মিত ভগ্নগৃহ, তৎকালের সেই ঘোর সংগ্রামের প্রমাণ প্রদান করিতেছে। প্রস্তর-সোপান শ্রেণীতে বেষ্টিত যে একটা জলাশয় আছে তন্মধ্যে শৈবাল ও জলজ লতাদি জন্মিয়৷ ইহার সলিল প্রায় দৃষ্টির বহিভূত করিয়াছে। এতদ্ব্যতীত এই স্থানের আর কোন পূর্ব গৌরব-চিহ্ন পরিলক্ষিত হয় না। এই যৎসামান্য কয়েকটা ধ্বংসাবশিষ্ট অংশই যেন অতীত গৌরবচিহ্নের পরিবর্তে শোক-চিহ্ন স্বরূপ এই বিজন প্রান্তরে বিদ্যমান রহিয়৷ এই স্থানের দুঃখকাহিনী জ্ঞাপন করিতেছে। যে তুর্গাভ্যন্তর একদা রাজপ্রাসাদাদিতে সুশোভিত ও বহুজনসমাকীর্ণ ছিল এবং না জানি যাহাতে কতরূপ আমোদ উৎসব হইত, ইদানীং সেই স্থান মৰ্কট ও বিষধর ভুজঙ্গাদির বাসভূমিতে পরিণত হইয়াছে। এই অঞ্চলে যে কয়েকটা দেব-মন্দির আছে, তন্মধ্যে কতকগুলির অবস্থা ভাল ; আর কয়েকটর অবস্থা উত্তম বলিয়া বোধ হইল না। একটা মন্দির বৃক্ষ লতাদি পরিবৃত হইয়া ধ্বংসপথে দাড়াইয়াছে। স্থানীয় প্রবাদ এই যে, বহুদিন পূর্বে জনৈক ব্যক্তি এই মন্দির প্রস্তুত করিয়াছিল ; কিন্তু ইহার নিৰ্ম্মাণ কাৰ্য্য শেষ হওয়ার কিযুদিবস পরই সেই ব্যক্তি কাল গ্রাসে পতিত হওয়ায় উক্ত মন্দিরে কোন দেব মূৰ্ত্তি প্রতিষ্ঠিত হয় নাই । তৎকালাবধি ইহ পরিত্যক্ত অবস্থায় থাকাতে এবংবিধ দুর্দশাগ্রস্ত হইয়াছে। বরুণী-পৰ্ব্বত-প্রান্তদেশে জনৈক “বখশী" অর্থাৎ উৎকল দেশের প্রধান সেনাপতি কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত “বখশী পুকুর” নামক ষে সরোবর আছে, তাহার দুই তীরে পূর্ববর্তী প্রাচীন খুরধার রাজগণের স্থাপিত কয়েকট পুরাতন