পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/১৮৫

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

సె) 8 অনুমান করেন, বারাণসীর নিকটবৰ্ত্তী কোন স্থানে তিনি জন্মগ্রহণ করিয়াছিলেন। পঞ্চদশবর্ষীয় এই সুন্দর বালককে দেখিয়া বারাণসীর এক শাস্ত্রবিশারদ সন্ন্যাসী বুঝিতে পারেন, যে এই বালক কালে অদ্বিতীয় জ্ঞানী হইবেন । তিনি বালককে নিজ শিষ্যরূপে গ্রহণ করতঃ শিক্ষা প্রদান করিতে থাকেন। অতি অল্পকাল মধ্যে বালকের অসাধারণ প্রতিভা দর্শনে তিনি মুগ্ধ হন। বালকের জ্ঞানস্পৃহা দিন দিন বৰ্দ্ধিত হইতে লাগিল এবং অচিরে তিনি সৰ্ব্বশাস্ত্রে সুপণ্ডিত জ্ঞানী পুরুষরূপে বারাণসী ধামে পরিচিত হইলেন। ক্রমে তিনি গুরুদেবের নিকট হইতে নানারূপ যোগ অভ্যাস শিক্ষা করেন ও উপযুক্ত গুরুর উপযুক্ত শিষ্য বলিয়া পরিগণিত হন। গুরুদেব র্তাহার নাম রাখেন—“স্বামী সত্যদেব সরস্বতী” । পাঠ সমাপনস্তে সত্যদেব গুরুদেবের চরণে বিদায় গ্ৰহণান্তর দেশ পর্য্যটনের অভিলাষ প্রকাশ করেন। আশীৰ্ব্বচনে অভিষিক্ত করিয়া গুরুদেব সত্যদেবকে বিদায় দান করিলে পর সত্যদেব নানা স্থান পৰ্য্যটন করিয়া অবশেষে হুগলী জেলার সুবিখ্যাত গুপ্তিপাড়া গ্রামে উপস্থিত হন। গুপ্তিপাড়ার বর্তমান অবস্থা অতীব শোচনীয়। কিন্তু চিরকাল এই গ্রামের এরূপ অবস্থা ছিল না। তৎকালে নদীয়া জেলার উলা ( বর্তমান বীর নগর ) ও হুগলী জেলার গুপ্তিপাড়া বিখ্যাত গণ্ডগ্ৰাম ছিল। দেশ বিদেশ হইতে ছাত্রগণ অধ্যয়ন উদ্দেশ্যে তথায় ভারতী অগ্রহায়ণ, ১৩২০ সমবেত হইতেন। সে সময় গুপ্তিপাড়ায় অনুন ৪০খানি টোল ও প্রায় ত্রিংশৎ সহস্ৰ নরনারীর বসতি ছিল । সুদূর বিক্রমপুর প্রভৃতি স্থান হইতে বিদ্যার্থীগণ শিক্ষালাভার্থে এইস্থানে আসিয়া বাস করিতেন । এবং অদূরবর্তী নবদ্বীপ, পুৰ্ব্বস্থলী ও শাস্তিপুরেরও অনেক বিদ্যার্থী এই স্থানে অধ্যয়ন করিতেন। ৬/বানেশ্বর তর্করত্ন প্রভৃতি পণ্ডিতাগ্রগণ্য মহানুভবগণ কর্তৃক টোলের পরিচালনা কাৰ্য্য সম্পাদিত হইত। মহামতি হাণ্টার তাহার “গেজেটিয়ার” মধ্যে উল্লেখ *f; to “Guptipara was a seat of learning............ i কালের বিচিত্র গতির অবর্তনে— ছিয়াত্তরের মম্বন্তরে ও ভীষণ মহামারীতে * গুপ্তিপাড়া ধ্বংসোন্মুখ । দেশ জঙ্গল ও ম্যালেরিয়া পরিপূর্ণ। বহু অট্টালিকা জনশূন্ত অবস্থায় বনমধ্যে নীরবে দাড়াইয়া অতীতের সাক্ষ্য প্রদান করিতেছে। গ্রামের উত্তর ও পূৰ্ব্বদিকে গঙ্গা ও দক্ষিণদিকে ক্ষুদ্রকায় বেহুল নদী—লক্ষ্মীন্দরের স্মৃতি বক্ষে ধারণ করিয়া কুলুকুলু নাদে বহিয়া যাইতেছে। সঘুদেব গুপ্তিপাড়ায় উপস্থিত হইয়৷ কৃষ্ণপুর নামক পল্লীতে একখানি কুটীর নিৰ্ম্মাণ করেন। এই পল্লী,—গ্রামের পূৰ্ব্ব সীমায়, গঙ্গাতীরে অবস্থিত ছিল। এখন গঙ্গা কিছু দূৱ দিয়া প্রবাহিত হইতেছেন এবং কৃষ্ণপুর নাম পরিবর্তিত হইয়া ঠাকুরপাড়া হইয়াছে। যে স্থানে সত্যদেব কুটার নিৰ্ম্মাণ করেন তথায় আম্র, কঁঠাল ইত্যাদি কতকগুলি বৃক্ষ ছিল। লোকালয় তথা হইতে কিছু

  • ১৭৬৯ ও ১৭৭০ থষ্টাব্দ