পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/১৮৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, অষ্টম সংখ্যা দূরে। সত্যদেব অধিকাংশ কালই বৃক্ষতলে যাপন করিতেন। অনেকেই তাহার নিকট ধৰ্ম্মকথা শ্রবণার্থে আগমন করিতেন ! সন্ন্যাসী সকলের সহিত সমভাবে বাক্যালাপ করিতেন । যে বৃক্ষতলে তিনি অবস্থান করিতেন তাহার অনতিদূরে একটী ক্ষুদ্র পথ ছিল। সেই পথে বহু নরনারী ভাগীরথী তটে গমনাগমন করিত। পথের অপর পাশ্বে একখণ্ড কৰ্ষিত ভূমি ছিল, বীজ তখনও বোপিত হয় নাই। একদিন সত্যদেব সেই কৰ্ষিত ভূমিতে একখণ্ড কঠিন মৃত্তিকায় মস্তক রক্ষা করিয়া ও আর একখণ্ড মৃত্তিকা, দুই হাটুর মধ্যস্থলে স্থাপন করিয়া শয়ন করিয়া ছিলেন। হেনকালে দুইটী স্ত্রীলোক কক্ষে কলসী লইয়া জলার্থে সেই পথে যাইতেছিল। সন্ন্যাসীকে তদবস্থায় নিরীক্ষণ করিয়া, একজন অন্ত জনকে বলিল—দেখ, ঠাকুর সংসার ত্যাগ করিয়াছেন, কিন্তু “আয়েস"টুকু এখনও ত্যাগ করিতে পারেন নাই। স্ত্রীলোকের এইকুখ শুনিয়া সত্যদেব মনে মনে বলিলেন –কথা ঠিক । বাস্তবিক তিনি ঐরূপ অবস্থায় শয়ন করিয়া কিঞ্চিৎ সুখবোধ করিতেছিলেন। সন্ন্যাসী হইয়াও তিনি মুখান্বেষী, এ কথা স্মরণ করিয়া একটু লজ্জিত হইলেন। স্ত্রীলোক দুইটা চলিয়া গেলে মাটির চাপ দুইখানা দূরে নিক্ষেপ করিয়া পুনরায় কৰ্ষিত ভূমিতে শয়ন করিলেন । জল লইয়া প্রত্যাবর্তন কালে সন্ন্যাসীর শয্যার পরিবর্তন দেখিয়া দ্বিতীয় স্ত্রীলোক প্রথমাকে বলিল—সন্ন্যাসী যে ‘আয়েষী’ শুধু তাহাই নহে, ইহার আবার বিলক্ষণ রাগও আছে। কারণ "আয়েষী’ বলা হইয়াছিল বলিয়া স্বামী সত্যদেব সরস্বতী సెbt ইনি ‘মাটর চাপ দুইটী ফেলিয়া निम्नांtछ्न । স্ত্রীলোক দুইটর ব্যবহারে সত্যদেব বিশেষ চমৎকৃত হইলেন ও স্থির করিলেন যে ঐ স্থানই তাহার সাধনার পক্ষে প্রশস্ত । কারণ যে স্থানে সাধারণ স্ত্রীলোকও কার্য্যের সামান্ত ক্ৰট লক্ষ্য করিতে পারে, সে স্থানে নিশ্চয়ই মহৎ উদ্দেশু সাধিত হইতে পারে। তথায় লক্ষ্য-ভ্রষ্ট হইবার সম্ভাবনা নাই। তদবধি সত্যদেব ঐ স্থানে থাকিয়া ভগবৎ চিন্তায় কালাতিপাত করিতে লাগিলেন। SR গুপ্তিপাড়ার y বৃন্দাবনচন্দ্রের মন্দির সুবিখ্যাত। প্রবাদ এই, দেবতা বৃন্দাবনচন্দ্র স্বেচ্ছায় সত্যদেবের নিকট আগমন করিয়াছিলেন। প্রবাদটি নিম্নে বিবৃত হইল। শান্তিপুরের ‘গড়’ নামক পল্লীতে এক মধ্যবিত্ত ব্রাহ্মণ সপরিবারে বাস করিতেন । ব্রাহ্মণ পরম ভক্ত, শুদ্ধাচারী, ক্রিয় কৰ্ম্মে বিশেষ আস্থাবান। গৃহে শালগ্রাম শিলা নিত্য পূজিত হইত। অতিথি কখন তাহার গৃহে বিমুখ হইতেন না। সপরিবারে উপবাসী থাকিয়াও অতিথির পরিচর্য্যা করিতেন। পরিবারবর্গের মধ্যে, তিনি নিজে, ব্রাহ্মণী, একটা পুত্র ও একটা বিবাহিত কন্যা। একদা নিশীথে নিদ্রাবস্থায় ব্রাহ্মণ স্বপ্ন দেখিলেন–র্তাহার গৃহে এক দিব-কাস্তি ব্রাহ্মণ আসিয়া বলিতেছেন-তুমি আমাকে নিত্য পূজা করিয়া পরিতৃপ্ত করিতেছ, আমি তোমার পূজায় অত্যন্ত সন্তুষ্ট হইয়াছি। কিন্তু এখন অন্যত্র যাইতে ইচ্ছা করি। গুপ্তিপাড়ায় আমার পরম ভক্ত সত্যদেব