পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/২২০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, নবম সংখ্যা শচীকান্ত একদৃষ্টে সেই শোভাময়ী প্রকৃতির পানে চাহিয়াছিল, বহুদিন পরে আজ যেন আবার প্রাণের মধ্যে এই কুহকিনীর উন্মাদনকারী মূৰ্ত্তি ছায়াপাত করিয়াছে। বাহিরে মাঠে মাঠে ফসল পাকিয়া উঠিতেছে, বাতাসে বিবিধ ফুলফলের গন্ধ ভাসিতেছে, অন্তমনে সে গুণগুণ করিয়া একটা সঙ্গীতের একটা চরণ ফিরিয়া ফিরিয়া গাহিতে লাগিল “জনম জনম হম্ রূপ নেহারিন্থ নয়ন না তিরপিত ভেল !” ক্রমে জানালার মধ্য দিয়া তরল রজত ধারা ঢালিয়া চাদ উঠিলেন, জানালার ঠিক সম্মুখেই একটা বড় নক্ষত্র কাছার দীপ্ত নেত্রের মত জলজলিয়া উঠিল, অল্প শীতামুভব করিয়া শচীকান্ত একথানা র্যাপার টানিয়া গায়ে দিল, তারপর আবার সেই জানালার নিকট আসিয়া দাড়াইল । সুবর্ণোজ্জল হরিৎক্ষেত্র জ্যোৎস্নাতরঙ্গে ঈষৎ তরঙ্গিত হইতেছে, চাপা গাছের ডাল নাড়া দিয়া মৃদু মৃদ্ধ বাতাস বহিতেছিল, অগণ্য নক্ষত্রের ঔজ্জ্বল্য চন্দ্রীলোকে স্নানায়মান,—আজি ७ध८ञांख्न श्रलया श्रेंका । 劇 শচীকান্ত ধীরে ধীরে দুইটা ঘর পার হইল, সিড়ি বাহিয়া নামিতে নামিতে দেখিল কল্যাণী উপরে উঠতেছে, সে দাড়াইল, “তোকেই খুজছিলাম।” “ও,” কল্যাণী যেন আর কিছু কথা খুজিয়া পাইতেছিল না। তাহার মুখ অত্যন্ত স্নান, এইমাত্র সে মায়ের কাছে কতগুলা বকুনি থাইয়া আসিয়াছে। গিরিজা সুন্দরী আজকাল বড়ই চটিয়া আছেন কাজেই কারণে অকারণে তিরস্কৃত বাগদত্তা సె 8సే হওয়া এখন এ বাড়ীতে অনিবাৰ্য্য, বিশেষতঃ কল্যাণীর পক্ষে । শচীকান্ত সঙ্কোচ বোধ করিতেছিল তাই সে নিজে হইতে কিছু বলিতে পাবিল না, দাড়াইয়া রহিল, তখন হঠাৎ কল্যাণীর মনে হইল হয়ত দাদাব কিছু বলিবার আছে। সে উৎসুক হইয়া জিজ্ঞাসা করিল “কি দাদা so “এমন কিছু না ফুলশয্যার দিন বদলানর জন্য মাসিম চটেচেন—না ?” “ত একটু চটেচেন বৈকি, সে ভুলে যাবেন এখন—“ “কেন তাহলে আর তাকে বিরক্ত করাআজই না হয়—” কল্যাণী গালভরা হাসির সহিত তৎক্ষণাৎ কহিয়া উঠিল “বেশ তো মাকে বলিগে” । শচীকান্ত জোর করিয়া সমস্ত সঙ্কোচ ত্যাগ করিতে চাহিল। এই পাচদিন ধরিয়া সে কেবলই মনে মনে পিছাইয়াছে ; আজ সবলে সমস্ত বাধা কাটাইয়া নিজের চিত্তকে উন্মুখ করিয়া তুলিল, সেই হিমহস্ত আর তেমন করিয়া তাহার পা দুখান চাপিয়া ধরিল না, সহজ ভাবেই সে জ্যোৎস্নালোকের মধ্যে অগ্রসর হইয়া গিয়া তাহার নববধূর সম্মুখে দাড়াইল, নুতন ভাবের আলোড়নে বক্ষ শুধু তখ বেগুমুনি হইতেছিল। 牌 - কমলা কোনদিকে চাহিয়া দেখে নাই, মাটির গড় প্রতিমার মত সে স্থির হইয়া, বসিয়াছিল, জীবনী শক্তি যেন তাহার মধ্যে নাই, প্রচণ্ড আঘাতে এইবার তাহাকে একেবারে ভাঙ্গিয়া ফেলিয়াছে। জানালার ঠিক সন্মুথেই সবুজ বৃক্ষরাজি ভেদ করিয়া শিশুচন্দ্র প্রসন্নমুখে উঠিয়াছেন।