পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/২২৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, নবম সংখ্যা পাচ্ছ সে তোমারই নয়। আর না বিন্ধা, যা জড়িয়ে ফেলচি সে আর খুলছে পারবো না কিন্তু এর বেশি আর কাজ নেই। আমি কে ? আমার মুখ দুঃখ এ জগতের নিয়মের কাছে কতটুকু ? নিজেকে আর বাড়াতে চাইনে।” কথা কয়টার মধ্যে ত্যাগশীল পিতৃহৃদয়ের মৰ্ম্মব্যথা স্নেহময়ী বিধবার বক্ষে বাজিল, তিনি একটা অছিলায় নিজেকে দমনের প্রয়াসে উঠিয়া গেলেন। কিন্তু গৌরী খবরটা পাইয়া তেমন সুখী হইতে পারিল না, সে ভাবিল এ কি রকম ! সত্যদা আমার—ওমা সে যে বড় বিশ্রা ! ছি ছি না,—সে ভাল হবে না। বরকে সবাই লজ্জা করে, ঘোমটা দেয়, আমি ত সে সব কিছুই পারব না, আমার ওরকম করতেই লজ্জ করবে, আর হাসি পাবে। কি যে ওঁরা সব ঠিক করেন ! মাসিমাকে গিয় বলিল “বিয়ে না হলেই তো হয় মাসিম, হয় না ?” বিষ্ক্য তাহাকে কোলে টানিয়া ললাটে চুম্বন করিয়া মনের ঈষৎ ভারটুকু লাঘব করিয়া ফেলিলেন, হাসিয়া কহিলেন “তাকি হয় রে পাগলি হিন্দুর ঘরে বিয়ে না হলে হয় না।” আর কিছু বলা যেন কঠিন হইয় উঠিল, বিশেষ সত্যর নামটা মুখে বাধিতেছিল । ( 8७ ) পরিবর্তনশীল সংসারে মুহূমুহ পরিবর্তন ঘটিতেছে, দেড় বৎসরে শিবনারায়ণের ংসারে বিস্তর পরিবর্তন ঘটিয়াছিল। সে পরিবর্তনে শিবনারায়ণকে বৃদ্ধ করিয়া করুণাময়ীকে পেষিত করিয়া ও সত্যকে গম্ভীর করিয়া তুলিয়াছিল, কেবল একমাত্র বাগদত্ত 為@* মনীষের কোমল চিত্তের উপরেই সেই ক্ষণ পরিবর্তনশীল কাল তাহার বর্ণচুলিকার টান । টানিতে কাতর হইয়াছিল, তাই সে এখনও তেমনি অপরিবর্বিত। সেই পঠনপাঠন, সেই গুরুদেব, স্নেহাস্পদে প্রতি, সেই হাসিমুখ, সবই যেন সেই । এত বড় একটা ভাগ্য পরিবর্তনে তাহাকে এতটুকু বদল করিতে পারে নাই যেন । তাহাকে দেখিয় শিবনারায়ণ নিজের অনুতাপকষায়িত্ত জর্জর হৃদয়ে গতীর বিস্ময় অনুভব করিতে করিতে মুগ্ধচিত্তে ভাবিতেন “ধন্ত তুমি মনীশ, দুঃথেঘমুদ্বিগ্নমনা মুখেমু বিগতস্পৃহ” সে তোমাকেই দেখিলাম !” কমলার দুদিনের স্মৃতি করুণাময়ীকে সন্ম চেয়ে কাতর করিয়াছিল। কোন কোন মানুষের মধ্যে এমন একটা জিনিষ আছে যাহা তাহাকে দুইটা দিনেই একজনের কাছে চিরপরিচিত করিয়া তুলে, আবার চিরক পরিচিতের মধ্যেও দুজনে একটা এমন কিছু অসামঞ্জস্ত দেখা যায় যদ্বারা, আজন্মের সহবাসেও তাহাদের পরম্পরের নৈকট্য অনুভূত হয় না। ইহাকেই প্রাচ্যজ্ঞানীগণ কৰ্ম্মবন্ধন কহিয়া থাকেন। পতিপত্নীর সম্বন্ধে বহুস্থলে এ দৃষ্টান্ত দেখা যায়। কোথাও পিতা পুত্রে মাতাকন্যায়, সহোদরে সহোদরায় এই ভাব সুব্যক্ত। করুণাময়ী অনাথ সখীপুত্রীকে গৃহলক্ষ্মী বধুরূপে কন্যাহীনগৃহে প্রতিষ্ঠা করিয়া এমনই মুখ পাইয়াছিলেন, তাহার সস্তানাপেক্ষাও অধিক স্নেহাস্পদ মনীশের বধুরূপে কল্পনা করিয়া তাহাকে এতখানি ভালবাসিয়াছিলেন যে করালীচরণের হীনতায় স্বামীর উচিত কোপকেও তিনি