পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/২৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

*७२ মিশিয়া গেলে আমিত্ব জ্ঞান কি প্রকারে থাকিতে পারে তাহা বুঝা যায় না। সুতরাং যদি মৃতব্যক্তির কোন রূপ স্থল্ম দেহ থাকে ওহি হইলেও ঐ সুহ্মদেহের আমিত্বজ্ঞান কিম্ব মুখ দুঃখ বোধ করিবার ক্ষমতা থাকিতে পারে না। সে অবস্থায় ঐক্লপ সুক্ষদেহ বা আত্মা থাকা বা না থাকা একই কথা । আমি অমুক ব্যক্তি ছিলাম ও মরিয়া গিয়া আমার আত্মা শূন্তে বিচরণ করিতেছে যদি এই জ্ঞান না থাকে তাহ হুইলে সেই আত্মা আমারই হউক বা অপরেরই হউক তাহাতে আমার কোনই ক্ষতি বৃদ্ধি নাই। এক্ষণে প্রশ্ন হইতে পারে যে ইহা দ্বারা কি এই প্রমাণ হইল যে সমুদয় কাৰ্য্যই ভৌতিক নিয়মে হয় ও ঈশ্বর বলিয়া কিছুই নাই ? এরূপ অনুমান করিলে তাহাও ভুল, কারণ আমরা দেখিতে পাই যে, যে ভৌতিক নিয়মে সকল কাৰ্য্য হইতেছে সেই নিয়ম বুদ্ধিমান । যাহারা নিরীশ্বরবাদী তাহাদিগকে জিজ্ঞাসা করা যাইতে পারে যে যদি সমুদয়ই ভৌতিক নিয়ম তবে ইহার মধ্যে বুদ্ধি ও উদেশ্ব কোথা হইতে আসিল ? ভ্রুণ দেহে রক্তসঞ্চালন, শ্বাসপ্রশ্বাস ও পরিপাক যন্ত্র এমন কৌশলে প্রস্তুত হয় যাহাতে তীক্ষ বুদ্ধির সমাবেশ দেখা যায়, হৃৎপিণ্ডের কপাটসমূহের ও পরিপাক যন্ত্র ভারতী পৌষ, ১৩২• সমূহের ভিন্ন ভিন্ন অংশের কার্য্যাবলী পৰ্য্যবেক্ষণ করিলে ইহাদের নিৰ্ম্মাণকৌশল ও উদ্দেশু পরিষ্কার রূপে প্রতীয়মান হয় । পরমাণুমধাস্থ এই বুদ্ধিবিশিষ্ট ক্ষমতাই ঈশ্বর। অনেকে ঈশ্বরেতে স্নায়ুব গুণ ( যথা দয়। ইত্যাদি ) আরোপ করেন, যাহা দেহী ব্যতীত অর্থাৎ মস্তিষ্কশূন্ত কোন পদার্থে আরোপ করা সঙ্গত নহে। সেইরূপ করিতে গেলে একটি দেই, যে আকারেরই হউক, কল্পনা করিতে হইবে, তৎসঙ্গে সঙ্গে তাহার আবাস স্থানও নির্ণয় করিতে হইবে, সে অবস্থায় এই অনন্ত সৌর জগতের এক কোণে পরমেশ্বরকে রাখিয়া দিতে হইবে। কিন্তু তাহা হইলে তাহাকে অতি ক্ষুদ্রভাবে কল্পনা করা হয়। কিন্তু বাস্তবিক পক্ষে মূল বিষয় তদ্বিপরীত, অর্থাৎ ঈশ্বর অসীম, অনন্ত, জন্মলয়বিবর্জিত মহাশক্তিশালী । যত রকমের ধৰ্ম্ম দেখা যায় তন্মধ্যে চিন্তা করিয়া দেখিলে হিন্দু ধৰ্ম্মই সৰ্ব্বাপেক্ষা অধিকতর চিস্তার ফল বলিয়া বোধ হয়। কোন ধৰ্ম্মে, এত গভীর গবেষণা দৃষ্ট হয় না। হিন্দুদের মধ্যে অনেক কথা পরস্পর বিরুদ্ধবাদী হইলেও ঈশ্বর সম্বন্ধে সকল গুলিই সমাজ বন্ধনের সহিত সামঞ্জস্ত রক্ষা করিয়াছে ; কোন শাস্ত্রোক্তিই ঈশ্বর ও সমাজ বন্ধনের সহিত বিরুদ্ধ সম্বন্ধযুক্ত নহে। (ডাক্তার ) শ্ৰীনিবারণচন্দ্র সোম।