পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/২৫৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, নবম সংখ্যা কথা দ্বারা ভাষা প্রচারিত হয় মাত্র । যখন দলের মধ্যে একটা হরিণ হঠাৎ মস্তক উত্তোলন করে, তখন অন্ত হরিণেরণও ঐরূপ করিয়া থাকে। ইহা এক প্রকার সাঙ্কেতিক ভাষা। এই সঙ্কেতের অর্থ “শ্রবণ কর* । আবার যদি কোন হরিণ এমন কোন বস্তু দর্শন করে, যাহা তাহার পক্ষে সন্দেহজনক, সে তখন ঈষৎ অস্ফুট শব্দ করে। ইহা একটি কথা । এই কথার অর্থ “সাবধান” । কোন বিপদজনক বস্তু নিরীক্ষণ করিলে সে অত্যন্ত চীৎকার করিয়া উঠে । তাহার অর্থ “দৌড়িয়া পলাও”। এখানে তিন প্রকারের ভাষা দেখা গেল—সাঙ্কেতিক, অস্কট শব্দজনিত এবং চীৎকারজনিত । বর্তমান যুগের ভাষারও এই তিন উপাদান। এই তিনই ভাষার কেবল প্রধান উপাদান নছে, উহাই একমাত্র উপাদান । যে ভাষার বলে বাগ্মী ডিমস্থিনীসের নাম আজও সজীব—যে সম গীতধ্বনিতে আজও ভাবতবর্ষের আকাশ তরঙ্গিত, সে ভাষা বনবাসী জীবের অস্ফুট বাকৃশক্তি হইতে অভিব্যক্ত হইয়াছে। বাক্যাবলী স্বষ্টির পূৰ্ব্বে মানুষ অঙ্গ সঞ্চালনাদির দ্বারা সাঙ্কেতিক উপায়ে মনোভাব জ্ঞাপন কবিত। ইহার তিনটি প্রমাণ দেওয়া যাইতে পারে। যে মানুষ আজন্ম সম্পূর্ণরূপে বধির, কথা বলিবার উপযোগী সমস্ত অঙ্গাদি বর্তমান থাকা সত্ত্বেও, সে মুক হইয়া থাকে। অনেকের ধারণা, মানুষ বোবা হইলেই কালা হয় । কিন্তু ঠিক তাঙ্গ নয়, কাল বলিয়াই সে বোবা । যদি ভাষা মামুষের সহজ শক্তি হইত, তাহা হইলে ভাষার উৎপত্তি సెty& বাক্যন্ত্রাদির অনাভাব সত্ত্বেও বধিরের মুক হইবার কোনই কারণ নাই । শ্রবণেন্দ্রিয়ের শক্তিহীনতার জন্ত তাহার বাকৃযন্ত্রও নীরব। এই উদাহরণ হইতে বুঝা যায় যে, ভাষাটা কেবল অমুকরণের বিষয়—সমস্তটা শুনিয়া শেখামাত্র । কথাব ভাষা শিখিতে পারে নাই বলিয়া মুকব্যক্তি সাঙ্কেতিক ভাষার উৎকর্ষ সাধন করিয়া তাহার দ্বারা তাহার মনোভাব জ্ঞাপন করিয়া থাকে। মুকের নিকট সাঙ্কেতিক ভাষা চরম উৎকর্ষ প্রাপ্ত হইয়া থাকে। আমাদের দ্বিতীয় প্রমাণ অসভ্য মনুষ্য। মূক ব্যক্তি অপেক্ষ ইহাদের ভাষা আর একটু বিস্তৃত । মুক-বধিরের সাঙ্কেতিক ভাষার সঙ্গে কতকগুলি শক (sound) যোজনা করিয়া ইহাদের ভাষা গঠিত হইয়াছে। মনের সব কথা ইহারা মুখে বলিতে পাবে না। কতকটা ইঙ্গিতে ও কতকটা শব্দের সাহায্যে ইহাদের মনোভাল জ্ঞাপিত হইয়া থাকে । শিশুর ভাষা আমাদের তৃতীয় প্রমাণ । সাধারণতঃ ইঙ্গিত ইসাব এবং কতক গুলি শব্দের সাহায্যে শিশু প্রথমে তাহার মনোভাব ব্যক্ত করিতে আরম্ভ করে । শিশুব এই চেষ্টা সহজাত এবং স্বাভাবিক । ক্রমশঃ সে সমস্ত ভাষাটা শুনিয়া ও দেখিয়া অনুকরণ করে । কথার ভাষা কৃত্রিম কিন্তু ইঙ্গিতের ভাষা স্বাভাবিক । পরিণত বয়স্ক মনুষ্যের ভাষাতে শিশুর এই ক্ষুদ্র ইঙ্গিতের ভাষা মিশ্রিত হইয়া রহিয়াছে। চিন্তার বিষয়টি যখন উন্নত নহে এবং বক্তব্য বিষয় বাগি তার প্রত্যাশী নহে