পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/২৫৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

リ% তখন উহা প্রধানতঃ ইঙ্গিতের সাহায্যেই প্রকাশিত হইয় থাকে। বক্ত তাকালে বাগ্মী যতই উন্নত চিস্তার বিষয় বলিতে থাকেন, তাহার হস্তপদাদি ততই নিশ্চল হয় । ইঙ্গিতের ভাষা তখন মনোভাব জ্ঞাপন করিবার উপযুক্ত নহে। তখন তাহার সমস্ত চিস্তার বিষয়টা ব্যক্ত হইয়া থাকে। আবার যতই তিনি চিন্তার নিম্নস্তরে অবতরণ কবিতে থাকেন, ততই তাহার হস্তপদাদিও ক্রমে সঞ্চালিত হইতে থাকে। বাক্যের ভাষায় যাহার যত বেশী অধিকার, তিনি ততই উৎকৃষ্ট বক্তা । ইঙ্গিতের ভাষা অনেকট বিষয় (Objective) চিস্তার কথা প্রকাশ করে । কিন্তু বিষয়ী (subjective) চিন্তা ব্যক্ত করিতে বাক্যের ভাষার প্রয়োজন । শৈশবাবস্থায় ভাষা কতকগুলি ইঙ্গিতের সমষ্টি ছিল। পরে ঐ সকল ইঙ্গিতের সহিত কতকগুলি শব্দ (sound) যোজিত হইল । কিন্তু এই ভাষার বিস্তার অত্যন্ত কম। এক সময়ে এমন অবস্থা উপস্থিত হইল, যখন উক্ত ভাষার দ্বারা সমস্ত মনোভাব প্রকাশ করা প্রায় অসম্ভব হইয়া উঠিল । উদাহরণ স্বরূপ মনে কর দুইজন অসভ্য মনুষ্য অন্ধকার রাত্রে পবপবের মনে ভাব প্রকাশ করিতে চায়। তখন সে কি করিবে ? সে সময় ইঙ্গিতের ভাষা নিষ্ফল । সুতরাং তখন সে নিশ্চয় কোন প্রকারে কয়েক প্রকার শব্দ একত্র করিয়া এক একটি কথার (word) স্বষ্টি করিল। এখন প্রশ্ন উঠিতে পারে, কথার স্বষ্টি সে কেমন করিয়া করিল ? মনে কর একদল গরু ভারতী বাক্যের (word) ভাষায় পৌষ, ১৩২s • বনমধ্যে বিচরণ করিতেছে। এমন সময় অগ্ৰবৰ্ত্তা গরু দূরে সিংহের গর্জন শুনিতে পাইল । সিংহের সেই শব্দ একটি ভাষা । ‘সি’হ’ এই কথা বলিলে আমরা যে দ্ৰংষ্ট্র নখরযুক্ত কেশরী বুঝিয়া থাকি, উহার ঐ গর্জন হইতে গরুটি তাহাই বুঝিল । এখন সেই গরু একটা কোনরূপ শব্দ করিয়া তাহার দলস্থ অন্ত গরুগুলিকে জানাইল যে সম্মুখে কোন একটা বিপদ উপস্থিত। কিন্তু ইহা যে সিংহসন্তুত বিপদ, না অপর কোন বিপদ, তাহ অবশু সে জানাইতে পারিল না । এরূপ জানাইতে হইলে সেই সিংহের শব্দটি তাহাকে অনুকরণ করিতে হইত । কিন্তু সেরূপ করা এ জন্তুর ক্ষমতার বহিভূত । এই গরুগুলি যদি গরু না হইয়া সে কালের মানুষ হইত, তাহ হইলে এ অবস্থায় অগ্রবর্তী ব্যক্তি নিশ্চয় সেই সিং হর শব্দ অনুকরণ করিয়া সহচর দিগকে জানাইত যে সিংহ উপস্থিত । বাতাসের মৰ্ম্মর ধবনি, প্রবহমান স্রোতের শব্দ, মধুকরের গুঞ্জন, পক্ষীর কাকলি প্রভৃতির অনুকরণ শব্দ এই গুলিকে বুঝাইত। যে সকল বস্তুর সহিত কেন না কোন একটা শব্দ যে কোন প্রকাবেই হউক সম্পর্কিত হইয়া আছে তাহীদের বিষয় এইরূপে ভাষামধ্যে প্রবিষ্ট হইল । একটি শিশুর ভাষা-শিক্ষা গোড়া হইতে অনুধাবন করিলে উক্ত বিষয় বেশ বুঝিতে রিা যায়। শিশু প্রথমে ত:হার শ্রবণেন্দ্রিয়েব সাহায্যে ভাষা শিক্ষা আরম্ভ করে । এ সময় যদি সে কোন বস্তু হইতে কোনপ্রকার শব্দ শুনিতে পায়,• তাহা হইলে সে তৎক্ষণাৎ