পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/২৬০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, নৰম সংখ্যা দর্শন তাহার নিজের কথায় ভাষার ভাণ্ডারের এক একটা কক্ষ পূর্ণ করিয়া তুলিল। ভাষার এইরূপ অভিব্যক্তি নিয়তই চলিতেছে এবং চিরকালই চলিতে থাকিবে। ঈশ্ববই মানুষকে সমাজবদ্ধ হইরা বাস করিতে আদেশ করিয়াছেন । পুৰ্ব্বেই বলিয়াছি, সমাজবদ্ধ হইয়া বাস করিতে হইলে সমাজস্থ সকলের সহিত মনোভাব প্রকাশ করিবার কৌশল নিতান্ত প্রয়োজনীয়। সেইজন্ত ঈশ্বর মানুষকে ভাষাশক্তি প্রদান করিয়াছেন। তিনি তাহাদিগকে কথা প্রদান করেন নাই— কথা গড়িয়া ভাষা স্বষ্টি করিবার সমস্ত শক্তিগুলি দান করিয়াছেন। তিনি মানুষকে কথা বলিবার যন্ত্র বিশেষ করেন নাই । মামুষ নিজে তাহার প্রয়োজনীয় ভাষা প্রস্তুত করিয়া লইয়াছে। ভাষার দ্যায় লিখনপ্রণালীও ক্রমশঃ অভিব্যক্ত হইয়াছে। প্রাচীনকালে ইজিপ্ট্র দেশে "মামুষ” এই কথা লিখিতে হইলে, একটা মানুষের ছবি আঁকা হইত। উচ্চারিত শব্দ অনুসারে বস্তুর নাম-করণ এবং আকৃতি চিত্রিত করিয়া কথা লেখা দুইই ঠিক একই প্রণালী। পরে সময় বঁাচাইবার জন্য ঐ লিখন প্রণালীকে সংক্ষিপ্ত করা হইল । তখন চিত্রগুলি কতকগুলা সরল রেখাপাতের দ্বারা বুঝান হইত। চীনদেশে একখণ্ড জমি লিখিতে হইলে একটি সমবাহু চতুভূজ আঁকা হইত। দুইটি সরল রেখা স্থল কোণে মিলিত হইলে ঘর বা ঘরের ছাদ বুঝাইত। কিন্তু এ উপায়ে কেবল বস্তুবাচক বিশেষ্য পদগুলি বুঝান বাইতে পারে মাত্র। পরে এই সকল উপায় হইতে কৌশলে গুণবাচক বিশেষ্য ভাষার উৎপত্তি సెlyసి পদও লেখা হইত। একত্র একটি মানুষ ও একখণ্ড জমির চিত্রে সম্পত্তি বা ধন বুঝাইত । ধনশালী হইলেই মুখী হয়। সুতরাং ঐ চিত্রের অর্থ সন্তুষ্টি । আবার একজন স্ত্রীলোকের ছবির উপর ছাদের চিত্র অঙ্কিত করিলে বুঝাইত, গৃহস্থ স্ত্রীলোক-শাস্তিময়ী স্ত্রীলোক। অতএব উক্ত চিত্রের অর্থ শান্তি বা বিশ্রাম। মানুষের জ্ঞান যতই দ্রুত বৃদ্ধি পাইতে লাগিল, লিপিশিল্প ততই উন্নতি লাভ করিল। অল্প দূরস্থিত বন্ধুর নিকট মনোভাব জ্ঞাপন করিবার জন্ত মানুষ কথা কহিতে শিখিয়াছিল। সভ্যতার দিনে যখন সমস্ত পৃথিবীর সহিত তাহার সম্পর্ক স্থাপিত হইল, তখন এক দেশ হইতে অন্ত দেশে সংবাদ প্রেরণের জন্ত আর এক প্রকার ইঙ্গিতের ভাষা— টেলিগ্রাফের আবিষ্কার হইল। টেলিগ্রাফের ভাষা শব্দ-সাঙ্কেতিক ভাষা। সুতরাং উক্ত ভাষা এখন উহার আদিম অবস্থায়। ঐ ভাষা ক্রমে উন্নতি লাভ করিয়া বাক্যের ভাষায় পরিণত হইল—টেলিফোনের স্বাক্ট হইল । এখনও মানুষ টেলিগ্রাফ বা টেলিফোনের অপেক্ষ উৎকৃষ্টতর ভাষার স্বষ্টি করিবার জন্ত ব্যগ্র। তাই ইন্দ্রিয়াদির সাহায্য ব্যতীত এক মন যাহাতে অপর মনকে সাড়া দিতে পারে—তাহার ভাব জ্ঞাপন করিতে পারে, তাহার চেষ্ট হইতেছে। এই ভাষাকে টেলিপ্যাথি নাম দেওয়া হইয়াছে। পাশ্চাত্য সমাজে এ বিষয়ে বিস্তর গবেষণা চলিতেছে। বর্তমান ভাষার অভিব্যক্তির পরবর্তী স্তর খুব সম্ভব টেলিপ্যাথি । জগতে বাক্যের স্বাক্ট অতি ধীরে ধীরে হইয়াছিল। জগতে উহার স্বষ্টির সম্ভাবন