পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/২৭৪

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

অবনত জাতি ( প্রতিবাদ ) প্রবন্ধলেখক শ্ৰীযুক্ত বীরেশ্বর সেন মহাশয় উtহার অবনত জাতি শীর্ষক প্রবন্ধে গ্রহীচার্য্য সম্প্রদায় সম্বন্ধে কতকগুলি অমূলক কথার অবতারণা করিয়াছেন । শাস্ত্রানুসারে ব্রাহ্মণেতর-জাতির শুধু দৈবজ্ঞ ব্রাহ্মণ কেন, যে কোন ব্রাহ্মণের সামাজিক মৰ্য্যাদা সম্বন্ধে কোন কথা বলিবীর অধিকারী নহেন। তিনি যে উল্লিখিত প্রবন্ধে কেবল শাস্ত্রবিধির অমর্য্যাদ করিয়াছেন তাহt নহে, বিবেচনা না করিয়া কোন কোন কথা লেখীয় ভব্যতারও সীম৷ অতিক্রম করিয়াছেন। অt সীম প্রভৃতি ব্ৰহ্মপুত্র নদের পূর্বপারস্থ প্রদেশ সমুহে ষে আমাদের সমশ্রেণীস্থ কোন ব্রাহ্মণের বাস আছে তাহ আমাদের পরিজ্ঞাত নাই। তবে বাঙ্গালী দেশে গ্রহীচার্য্যগণ চিরকালই এক শ্রেণীর ব্রাহ্মণ বলিয়া সম্মানিত । বাঙ্গালীর দৈবজ্ঞ ব্রাহ্মণগণ অস্তান্ত শ্রেণীর ব্রাহ্মণের লু্যায় অনন্তকাল হইতে বংশপরম্পরাক্রমে ত্রিসন্ধ্য গায়ত্রীর উপাসন, শিবপুজা, নারায়ণ পূজা এবং দৈবপৈত্র্য যে সকল কৰ্ম্ম আছে যথাৰিধি তৎসমস্তেরই অনুষ্ঠান করিয়া আদিতেছেন। জ্যোতিষী পণ্ডিতরূপে ইহার হিন্দুসমাজের যাবতীর বৈধকার্য্যের বিধিব্যবস্থা প্রদান করেন। রাঢ়ীয়, বারেন্দ্র প্রভৃতি অন্যান্ত ব্রাহ্মণ গৃহে গ্রহযাগাদি বেদোক্ত কার্য্যে ব্ৰতী হইয়া থাকেন। এই বাঙ্গাল দেশের এক চতুর্থাংশ গ্রহাচাৰ্য্য প্রাচীন রাজা ভূম্যধিকারীদের প্রদত্ত ব্ৰহ্মত্র ও দেবত্র ভূমি ভোগ করিতেছেন। এই সম্প্রদায়ের র্যাহারা শাস্ত্রজ্ঞ অধ্যাপক তাহারা অস্ত্যন্ত ব্রাহ্মণ পণ্ডিতের স্যায় বৈধ ব্যাপারে নিমন্ত্রিত ও সন্মানিত হন। বিহার প্রদেশে এই শ্রেণীর যে সকল ব্রাহ্মণ বাস করেন তাহার কলোজিয়া, গৌড় প্রভৃতি সকল শ্রেণীর ব্রাহ্মণের ও অস্তান্ত উচ্চ বর্ণের পুরোহিত । সেনমহাশয় একস্থানে লিথিয়াছেন “সৌভাগ্যের বিষয় এই যে গণকদিগকে গবর্ণমেণ্ট ব্রাহ্মণরূপে মানিয়া লইতে অস্বীকার করিয়াছেন।" এই কথাটা সম্পূর্ণ

অসত্য। তিনি শুনিয়া অভ্যস্ত সন্তপ্ত হইৰেল ষে গবর্ণমেণ্ট “ভারতে মনুষ্যগণনার স্বষ্টি হইতে বাঙ্গালাক্স প্রত্যেক গ্রহীচার্য্যসম্প্রদায়কে এক শ্রেণীর ব্রাহ্মণ বলিয়া গণনা করিয়া আসিতেছেন । এবং বাঙ্গালীর সকল শ্রেণীর ব্রাহ্মণের মধ্যে গ্রহাচাৰ্যদিগকে চতুর্থস্থান প্রদান করিয়াছেন । পুৰ্ব্বে রাঢ়ীয়, বীরেন্দ্র, বৈদিক ( পাশ্চাত্য ও দক্ষিণাত্য ) গ্রহাচাৰ্য্য, অগ্ৰদানী, বর্ণযাজী প্রভৃতি ব্ৰাহ্মণগণের পৃথক পৃথক্ সংখ্য গ্রহণ করা হইত। গত মনুষ্যগণনায় ও তৎপূর্ববর্তী মনুষ্যগণনায় সেরূপ সংখ্যা গ্রহণ করা হয় নাই । বাঙ্গালার সকল শ্রেণীর ব্রাহ্মণকেই “ব্রাহ্মণ" এই শিরোনাম দিয়া একত্র গণনা করা হইয়াছে । তার পর সেনমহাশয়ের আর একটি ভ্রম এই যে, তিনি লিথিয়াছেন "গ্রহচার্য্যগণ খাট ব্রাহ্মণ হইবার জন্ত চীৎকার করিতেছেন।” একথা তিনি কি প্রমাণবলে জানিলেন ? কই বাঙ্গালা দেশের কোন গ্রহাচাৰ্য্য যে কাহারও কাছে গিয়া ঐন্ধপ চীৎকার করিয়াছেন এ সংবাদ ত আমরা পাই নাই। তিনি “খাটী ব্রাহ্মণ” কাহাকে বলেন? শাস্ত্রের অমুশাসন অনুসারে যিনি যথাবিধি উপনয়ন সংস্কারের পর বেদ ও অন্তান্ত শাস্ত্র অধ্যয়ন করেন, ব্রহ্মচৰ্য্য পালন পুৰ্ব্বক সমাবৰ্ত্তনান্তে যথাশন্ত্রি দারপরিগ্রহ করিয়া প্রতিদিন পঞ্চমহাযজ্ঞের অনুষ্ঠান করেন, তিনিই "খাটী ব্রাহ্মণ" । উল্লিখিত শাস্ত্রেীক্ত বিধি সকল অন্তান্ত ব্রাহ্মণগণ যেরূপ পালন করেন, গ্রহাচাৰ্য্যগণও তদ্রুপই করিয়া থাকেন। বলা বাহুল্য যে শাস্ত্রে কোন বিশেষ নামযুক্ত ব্রাহ্মণ “বাটী ব্রাহ্মণ" বলিয়া উক্ত হন নাই। বেদোক্ত নিবেকাদি শ্মশানাস্ত বিধি যাহার সম্বন্ধে যথাযথ প্রতিপালিত হয় তিনিই খাট ব্রাহ্মণ । তার পর সেনমহাশয় আচার ব্যবহারের কথা উল্লেখ করিতে গিয়া যে অশ্রুতপূৰ্ব্ব বিদ্বেষ ভাব প্রকাশ করিয়াছেন উহ! আলোচনার অধোগ্য । তিনি জানেন