পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৩১৭

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

:e 8ు সেনাপতি আমার দলের একজন সৈন্তকে মুক্তি দিলেন । সে লোকটা দামামা বাজাইত— এই জন্তই তাহাকে ক্ষমা করা হইল। শুনিলাম সুলতানের আদেশ, বাদকদের হত্যা করা न ट्झ ! আমার তখন মুহূর্তের জন্ত একবার মনে হইল,—“হায়! হায়! আমি যদি কোন রকম বাজনাও বাজাতে জানতাম !” অবশু মুক্তি লাভ করিলে শক্রদলে যোগ দিতে হইবে। তাহাতে কি ? প্রাণটাত রক্ষা পাইত ! কিন্তু সে কথা ভাবিয়া ফল কি ? আমিত গান বাজনার কিছুই জানিনা ! আমাদিগকে এক সারিতে দাড় করাইয়া আমাদের চোখ বাধিয়া দিল । লক্ষ্য করিয়াছিলাম দশজন হত হইলে আমায় গুলি করা হইবে। অন্তিম কাল সন্নিকট বুঝিয়া কাতর হইয়া পড়িলাম । রুদ্ধ দৃষ্টির সম্মুখ দিয়া একে একে আমার পত্নী, পুত্র ও রামদীনের মূৰ্ত্তি ভাসিয়া গেল । পরমুহুর্তেই গুলি করিতে আরম্ভ করিল। এক ! ছুই!...... আর শুনিতে পাইলাম না। অামার শরীরের মধ্য দিয়া রক্তস্রোত দ্রুততর বেগে ছুটাছুটি করিতে লাগিল। আমার সহজ জ্ঞান লোপ পাইয়া আসিল । অতি কষ্টে আমি দণ্ডায়মান রহিগাম। আবার বন্দুক গৰ্জ্জিয়া উঠিল। ওঃ ! সে কি শব্দ ! জীবনে আমি তাহা ভুলিতে পারিব না -আমি কিছুই অনুভব করিতে পারিলাম না, কিন্তু তবু আমার মনে হইল গুলিতে আহত হইয়াছি! ঠিক সেই সময়ে কে আমার স্কন্ধ স্পর্শ করিল । * e 馨 ভারতী আকাশে চাদ উঠল । পৌষ, ১৩২ চক্ষু চাহিলাম ! কিছুই দেখিতে পাইলাম না। মনে হইল—“তবে বোধ হয় এখনও চোখ বাধা আছে।” চোখে হাত দিলাম ; হস্ত আমার মুক্তচক্ষু স্পর্শ করিল। অদূরে একটা পেটা ঘড়িতে টং টং করিয়া নয়টা বাজিল । বুঝিলাম রাত্রি নয়টা আমি তখন একটা অন্ধকার ঘরে অবস্থিত। কাহার একটা ছায়ামূৰ্ত্তি আমার দিকে সরিয়া আসিল । আমি ব্যগ্ৰকণ্ঠে জিজ্ঞাসা করিলাম,— “আমার লোকেরা ? কোথায় তারা ?” উত্তর হইল,—“কবরে ।” স্বর আমার চিনিতে বিলম্ব হইল না ; —সে রামদীন ! রামদীন বলিতে লাগিল,—“তোমার সাম্নেই সেনাপতিকে গুলি করি তা তুমি দেখেচ । তারপর ক্রমান্বয়ে লোক মারতে লাগলুম। ক্রমে অনেক রাত্ৰি হ’ল – কিন্তু তোমায় কোথাও খুজে পেলুম না। শিবিরে ফিরে তোমার সন্ধান কলুম কিন্তু তোমায় দেখতে পেলুম না। খুজে খুঁজে শেষে হায়রাণ হ’য়ে পড়লুম ;–ক্লাস্তিতে শরীর অবশ হ’য়ে এল —ঘুমিয়ে পড়লুম। তারপর আজ যখন তোমার সঙ্গীদের গুলি করা হয় তখন আমার ঘুম ভাঙ্গল’ । তার আগে আমি মনেও করিনি যে তুমি বন্দী হ’য়েছ। ছুটে বধ্য ভূমিতে এসে হাজির হলুম—দেখলুম আর দু’জনের পরই তোমায় গুলি ক’রবে। মামার বুদ্ধি লোপ পেয়ে গেল। আমি ছুটে গিয়ে তোমায় সেখান থেকে সরিয়ে আনলুম। উন্মত্তের মত চীৎকার ক’রে বল্লুম,—