পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৩২৬

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, দশম সংখ্যা “আমার তো কোনই দ্বিধা নাই ।” নন্দকিশোরের উত্তরে প্রসন্নচিত্তে শিবনারায়ণ উঠিয়া তাহাকে আলিঙ্গন করিলেন, “আমারও বিন্দুমাত্র না। সাৰ্ব্বভৌম মহাশয়ের চেয়ে শাস্ত্রাচার আমরা কি বেশী বুঝি ? ঋষি প্রতিষ্ঠিত সমাজধৰ্ম্ম ঋষিদ্বারা সংস্কৃত হবে, আমরা একে গড়িনি, আমাদের হাতে ভাঙ্গবেও না । “তুমি সন্মত আছ মনীশ ?” মনীশ সাগ্রহে উত্তর করিল “সৰ্ব্বাস্ত;করণে।” বিবাহ হইয়া গেল, নন্দকিশোর অবশ্য তেমন করিয়া মেয়েলি কান্না কাদিতে পারিলেন না কিন্তু র্তাহার মন তেমনিই সুখে দুঃখে একটা অব্যক্ত কান্না কঁাদিতেছিল । মনীশকে ডাকাইয়া বলিলেন “মেয়েটি আমার একটু চঞ্চল তুমি ওর সব ক্রটি শুধরে নিও ।” মনীশ মৃদু হাসিয়া কহিল “আপনাকে কিছুই বলতে হবে না আমরা ওঁকে আপনার চেয়েও বেশি চিনি।” কত দিন ছিপ কাড়িয়া লইয়া ভৎসনা করিয়াছে, কতদিন অপক ফল হাত হইতে ফেলিয়া দিয়াছে, সেই সব স্মৰণ করিয়া, সে নবদম্পতির পানে চাহিয়৷ একটু খানি মেহের হাসি হাসিল । সেই দুরন্ত বাল্যসঙ্গী দুইটী অজ নম্রশিরে লজ্জাবনত মুখে চিরসঙ্গী রূপে আবদ্ধকরে দাড়াইয়। মনীশের দৃষ্টি গভীর আনন্দের জলে ঈষৎ ঝাপসা হইয়া আসিল । ফুলশয্যার গভীররাত্রে নিদ্রিতা বধুকে জাগাইয়া সত্য কহিল “তোমায় একটা কথা বলি গৌরি, সবচেয়ে দরকারী কথা, তাই সব আগে বলচি। আমার দাদাকে তুমি খুব ভক্তি বাগদত্তা > * 4t করে, তিনি যেন কখন তোমার পরে ঈষৎ মাত্র অসন্তুষ্ট না হতে পারেন।” গৌরী অন্ধকারে তাহার মুখ দেখিতে পাইল না কিন্তু কথাগুলার ভাবে ও স্বরে যেন একটু থমকিয় গেল। সে তৎক্ষণাৎ অমুভব করিল, যে সত্যর জন্ত তাহার প্রাণ কাদিয়া ফিরিতেছিল এ সত্য যেন সে সত্য নয়। একটু ভীত হইল বিস্ময়ও বোধ করিল-মানুষ এত বদল হয় ! নিজেও যে সে অনেকটা বদলাইয়াছে তাহা বুঝিতে পারে নাই। এ গম্ভীর প্রতিজ্ঞার অর্থ ভালরূপে হৃদয়ঙ্গম না করিলেও ইহা দ্বারা সম্মোহিত হইয়া সে মন্ত্ৰমুগ্ধবৎ বলিল “আচ্ছা!” মনীশের ত্যাগ মনীশের মহত্ত্ব মনীশেব স্নেহ তাহার স্নেহধার ভাইয়ের মনে নবযুগ আনয়ন করিয়াছিল । পুত্রের মধ্যে শিবনারায়ণ পুনর্জাত হইয়াছিলেন। এমনি করিয়াই মানুষ অমরত্ব লাভ করে, ইহাই বংশ গৌরব ! (8b, ) বৃক্ষরোপণাস্তে সারা বৎসর ধরিয়া জলসেকাদি দ্বারা তাহাতে একটি দুইটি করিয়া কতকগুলি ফুল ফুটিলে সেই কুম্মচয়নে গাথা মালাগাছি কণ্ঠে ধারণ মাত্রে যদি তাহার মধ্য হইতে একটা অতি বিষাক্ত কীট বাহির হইয়া বক্ষে দংশন করে তাহা হইলে মনে যেমন একটা বিস্ময়বিমুঢ় ভাবের সহিত ক্ষোভের ধিক্কার উঠে ফুলশয্যার রাত্রে নবপরিণীতার ব্যবহারে শচীকান্তের চিত্তেও ঠিক সেইরূপ একটা ভাবের উদয় হইয়াছিল। বাহিরের ঘরে চৌকিতে বসিয়া উৰ্দ্ধে চাহিয়া যতই সে এ ভাবনাকে