পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৩৩০

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

৩৭শ বর্ষ, দশম সংখ্যা “সে উন্মাদ নয়, দ্বিতীয়তঃ সে আমারই বাগদত্ত। --ইহার প্রমাণ আমার বাবাকে পত্র লিখিলেই পাইবেন। তৃতীয়তঃ রাঢ়ী বারেন্দ্রে বিবাহ শাস্ত্রবিরুদ্ধ নয়। পথের দুর্গমতার ভেদবাধ ঘুচিবার সঙ্গে সঙ্গে এ ভদ বাধা কেন না দূর হবে ?” “তুমি চালাইবে না কি ? ভট্টনারায়ণই পারিলেন না তুমি তো তুমি ! শাস্ত্রে ও দেশাচারে মিল থাকে না, শাস্ত্রাপেক্ষাও কুলপ্রথাকে এদেশে বড় করে দেখা হয় । রাঢ়ীবারেন্দ্রে বিবাহ দোষের না হতে পারে কিন্তু অপ্রচলিত ।” তর্ক চড়িতেছে দেখিয়া শচীর জেদও চড়িল, সে কহিল “প্রথম ইংরেজি শিক্ষার আমলে কেহ ছেলেকে বিদেশী ভাষা শিক্ষা দিতে চাহিত না, ট্রেণে চাপিত না, কলিকা তীয় যাইত না, ডাক্তারি শিখিত না, এখন এ সকল দেশাচার হইয়া গিয়াছে, তাহা অদ্যায় নহে, পাপ নহে বরং সমাজের পক্ষে শুভ। . তাহ প্রচলিত করিবার জন্ত প্রথম এক জনেই চেষ্টা করে তাহার জন্ত পীড়িতও হয়, ইহা অনিবাৰ্য্য, আমি জানি আমি ঠিকই করিয়াছি। কমলা আমার প্রথম বাগদত্ত ।” কি নির্লজ্জ ! হা রে শিক্ষাগৰ্ব্বিত আধুনিক ছেলে ! গুরু লঘু জ্ঞানও বিধাতা তোদের নিকট হইতে হরিয়া লইয়াছেন। বুড়াদের ধৰ্ম্মশিক্ষা দিতে সঙ্কোচও বোধ হয় না ! বিরক্ত ও ক্ষুঃচিত্তে বিচারকগণ জিজ্ঞাসা করিলেন “তা হলে তুমি তোমার এই অসিদ্ধ বিবাহের পত্নীকে ত্যাগ করতে ইচ্ছুক নও ?” “uস আমার ধৰ্ম্মপত্নী।” “বেশ ধর্মের অর্থটা ভালই হৃদয়ঙ্গম বাগাত্ত e & సి. করেচ!” গৃহ বহুক্ষণ নিস্তন্ধ রহিল । “আমাকে আর কিছু বললার আছে ?” “তোমায় ? কি বলব ! তোমার মাসিমাকে এই বলবার অাছে যে যদি তিনি তোমাব ধৰ্ম্মপত্নী সমেত তোমার সঙ্গে কোন সংস্রব রাখেন তাহলে এ ঘরের সঙ্গে আমাদের সকল সম্বন্ধ এই পৰ্য্যন্ত ! আমবা শাস্ত্র সমাজ লোকুচার সবই মেনে থাকি এখনও এতদূর আলোক পাইনি তো ! আহত বক্ষ ফাটিয়া বাহির হইল “তাই হোকৃ" । রাত্রি হইয়া আসিল বাঙ্গিরের ও ভিতরের গোলমাল কিছুই কমিল না আপন গৃহের মধ্যে বহুক্ষণ পদচারণ করিয়া শচীকান্ত এই কিছুক্ষণ মাত্র বিছানায় আসিয়া শুইয়াছে। ঘুমাইবার ইচ্ছা ছিল না, চলিবার শক্তি হ্রাস হইয়াছিল ! যে প্রতীক্ষিত কালের জন্ত প্রভাতে মন ব্যাকুল হইয়াছিল, সে ব্যাকুলত৷ আর নাই। মন এখন জ্যোৎস্নমধুর যামিনীর সুখশয়ন ছাড়িয়া বন্ধুহীন প্রবাসেব অসহায় অবস্থা স্মরণে শুকাইয়া উঠিতেছে । ইহার মধ্যে অনেকখানি ঘটিয়া গিয়াছে। মাপীমার সহিত সাক্ষাৎ হইয়াছিল, কথাবাৰ্ত্তাও হইয়াছে, উপসংহার ভালরূপ হয় নাই । কমলাকে গৃহে স্থান দেওয়া সম্ভব নয় একথা সেও বুঝে, কিন্তু ইহার মীমাংস মাসিমাও ঐ একইরূপ করিতে চাহেন ! শুধু ভরণপোষণ ভার –হরি তাহারা যদি বুঝিতেন ! শেষকালে তিনি কাদিয়া উঠয় গেলেন, বললেন “তুই যদি এমন করে আমার মায়। কাটতে পারিস্ তবে আমিই কি আর পারিনে ! যা ধৰ্ম্ম হয় কর ” সে এ বেদনদগ্ধ অভিযোগের উত্তর