পাতা:ভারতী কার্তিক-চৈত্র ১৩২০.djvu/৩৩৩

উইকিসংকলন থেকে
এই পাতাটির মুদ্রণ সংশোধন করা প্রয়োজন।

e*" দাসী আসিয়া সহানুভূতিহীন কঠিন হস্তে একপ্রকার টানিয়া আনিয়া গাড়ির মধ্যে তাহাকে পুরিয়া দিতেই গাড়ির কবাট সশব্দে বন্ধ হইয়া গেল। সেই রুদ্ধ কক্ষ গাঢ় অন্ধকারে ভরিয়া গেল। সেই অতলস্পর্শ অন্ধকারের মধ্যে কমলার শ্রুতিশক্তিহীনপ্রায় কৰ্ণে প্রবেশ করিল “তোমারও কেহ নাই ; আমিও আজ নিৰ্ব্বান্ধব। আজ থেকে শুধু আমরা পরস্পরের, আর সেই আমাদের পক্ষে যথেষ্ট !” 8ふ বিবাহের সাত আট মাস পরে শচীকান্ত ডেপুটি কলেক্টরের পদ লইয়া সদর হইতে দরিয়াপুর সবডিবিসনে বদলি হইয়া আসিল । এ পদটুকু পাইতে তাহাকে এ কয়মাস ধরিয়া বড় অল্প শ্রম করিতে হয় নাই । সমস্ত শক্তিকে জাগ্ৰং করিয়া তুলিয়া সে খাটিয়াছে, নিজের প্রতিও তিলমাত্র মমতা ছিল না। সে শ্রমের ফলও ব্যর্থ হয় নাই ইহার বলে অতি অল্পদিনেই সে উদ্ধে স্থান লাভ করিয়ছে। এতদিনে অবসর মিলিল, এইবার আঃ ! রণশ্রাস্ত জীবনকে অনাবিল শান্তি - বারি পান করাষ্টয়া জীবনটা শুধু উপভোগ করিতে চায় ! রত্নপুকুর ত্যাগ করিয়া আশ্রয়হীন অবস্থায় বন্ধু নলিনাক্ষের সাহায্য না পাইলে বোধ হয় এই উচ্চ পদ প্রাপ্ত ঘটিত না । এতদিন তাহার মায়ের কাছে কমলাকে রক্ষা করিয়াসে সংসার ক্ষেত্রে যুঝিতে দাড়াইয়াছিল। আজ সফলপ্রস্বত্ব হইয় গচ্ছিতধন ফিরাইয়৷ আনিল। এপর্য্যন্ত কমলার সহিত তাহার দেখাসাক্ষাৎ ঘটে নাই, বন্ধুগৃহে কোনদিন ভারতী করিল। মাঘ, ১৩২৪ সে তাহার সহিত দেখা করিতে সাহসও করে নাই, পাছে বন্ধুর সাক্ষাতে কমলার অনাগ্রহ সুস্পষ্ট হইয় পড়ে । কিন্তু ভক্ত বন্ধু ইহাকে খুব বৃহৎ করিয়াই দেখিয়াছিল ; ভাহীর মহত্ত্বে মুগ্ধ হইয়াছিল “কৰ্ত্তব্যের কাছে কমলাও কিছু নয় এমন মনের বল তোমার !” এই বলিয়া সে তাহাকে প্রণাম করিল। দরিয়াপুরের সাবডিবিসন অফিসারের বাংলা খানি ঠিক বাংলা নয়, তাহ একখানি অনতিবৃহৎ দ্বিতল অট্টালিকা। চারিদিকে সবুজ শস্তক্ষেত্রের মাঝখানে শুভ্র গৃহট চিত্র হিসাবে অতিমুন্দর। এ গৃহের সাজসজ্জাতেও কোন ক্রটি ছিল না। সাধ্যাতীত ব্যয়ে গৃহস্বামী তাহার যথাস্থানে যাহা থাকা উচিত তাহাই সাজাইয়া ছিলেন । এই নুতন সজ্জিত নবীন ংসারে শচীকান্ত তাহার বধূ আনিয়া প্রতিষ্ঠা তার পর এত দিনকার রুদ্ধ উচ্ছাস মুক্ত করিয়া দিয়া কহিল “এই তোমার ঘর সংসাব দেখে নাও, আর আজ থেকে আমাকেও তোমার কাছে টেনে নাও,—কমল কাছে নাও বড় দূরে রয়েছি, অনেক তফাতে রেখেছ, আর না সরে এস।” তাড়াতাড়ি কাজ সারিয়া নবীন গৃহস্বামী গৃহে ফিরিল । সিঁড়ির পথে, বারান্দায়, ঘরে কেহ কোথাও নাই। ছাদে,— না ছাদের সিড়ি ত নাই ? ওই যে একটা ঘরের কবাট রুদ্ধ ! কমল ! খোল কমলা ! ঘর নিঃসাড়া, দ্বার ছিদ্রহীন । তাহার শরীর মন ভল্পে অবসর হইয়া আসিল । নীচে অtসিয়া নব-নিযুক্ত দাসীকে জিজ্ঞাসায় জানিল দ্বিপ্রহর হইতেই দ্বাররুদ্ধ, অভুক্ত আহাৰ্য্য